জখম পা নিয়ে হুইল চেয়ারে চেপেই রাজ্যের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছেন তিনি। একের পর এক সভা থেকে ঝড় তুলছেন। জেলার ৫টি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থীদের জন্য শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানের তিনটি জনসভা করেছেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন মেমারির সভা থেকে মমতার আহ্বান, ‘মা বোনেরা বিজেপিকে পরাস্ত করতে হবে। একটা করে ভোট দেবেন আর একটা করে গোল দেবেন।’ তিনি সকলকে সতর্ক করে বলেন, ‘আপনি ভোট না দিলে নামটা আধার কার্ড থেকে বাদ দিয়ে দেবে, নাগরিকত্ব নিয়ে নেবে। আসামের মতো ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেবে।’ তাঁর হুঙ্কার, ‘ওরা উত্তরপ্রদেশ থেকে রেলে করে গুন্ডা নিয়ে এসেছে। এসব কথা বলার পর আপনারা আমাকে খুন করার প্ল্যান করছেন, কিন্তু আমি বাঘের বাচ্চার মতো লড়বো।’ তিনি এ-ও বলেন, আমার পায়ে চোট। কিন্তু আমি আমার মা বোনেদের পায়ে ভর দিয়ে এসেছি। এই নির্বাচনটা বাংলার ইজ্জত বাঁচানোর নির্বাচন। বাংলার মা বোনেদের আত্মসম্মান বাঁচানোর নির্বাচন।
এদিন অমিত শাহকে বিঁধতেও ছাড়েননি মমতা। তিনি বলেন, ‘উঁচুতলাতে বলব, টাকা আসলে টাকা চলে যায়। বসন্ত কিন্তু রয়ে যায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেশের কাজ না করে বাংলায় বসে চক্রান্ত করছে, পুলিশদের ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে, নরেন্দ্র মোদীকে বলছি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ন্ত্রণ করুন।’ তাঁর অভিযোগ, ‘কিছু অপর মহিলা পুলিশ অফিসার বিজেপির সঙ্গে আছে, নন্দীগ্রামের রবি মান্না বিজেপির হাতে আক্রান্ত হয়েছে আজকে মারা গেছে। আমার মাথাভাঙায় প্রার্থীকে মেরে এসেছে, এগুলো অমিত শাহ প্ল্যান করে করছে, হেরে যাচ্ছে তাই করছে। খানাকুলে আমার কর্মীকে খুন করেছে। আমার প্রার্থী সুজাতা মন্ডলকে মেরেছে।’
বিজেপিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘আমরা বলি হরে কৃষ্ণ হরি হরি, এসো ভালো কাজ করি, আর বিজেপি হচ্ছে ছদ্মবেশী তপস্বী, ওরা বলে হরে কৃষ্ণ হরি হরি, নোটবন্দীর ডাকাতি করি।’ তাঁর সাফ কথা, আমরা বিজেপির মতো ভন্ড তপস্বী নই। আমরা উন্নয়ন করে তারপর বলি ভোট দিতে। এখন ৭০ লক্ষ মেয়েরা কন্যাশ্রী পায়। ৭০ লক্ষ শিক্ষাশ্রী, ২ কোটি ৩২ লক্ষ ঐক্যশ্রী স্কলারশীপ দিয়েছি। তিনি জানান, আমরা এবার বাড়িতে বাড়িতে বিনামূল্যে খাদ্য পৌঁছে দেব। মা বোনেদের ৫০০- ১০০০ টাকা মাসে মাসে হাতখরচা দেব। ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার জন্য ১০ লক্ষ টাকার ক্রেডিট কার্ড করে দেব। তারা দেশে বিদেশে পড়তে পারবে। আমাদের সরকার এলে কৃষকরা ১০ হাজার টাকা পাবেন, প্রান্তিক চাষীরা ৫ হাজার টাকা পাবেন।