দেশজুড়ে মাথাচাড়া দিয়েছে কোভিডের দ্বিতীয় ওয়েভ। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। বাড়ছে উদ্বেগ। এবার মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারের দাবি, করোনা ভ্যাকসিনের স্টক প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বক্তব্য, স্টক যথেষ্টই আছে। কয়েকটি রাজ্য নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকা দেওয়ার জন্য স্টক ফুরিয়ে যাওয়ার কথা বলছে। এই পরিস্থিতিতে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী শুক্রবার বলেন, “যদি যথেষ্ট পরিমাণ ভ্যাকসিন মজুত না থাকে, তাহলে ব্যাপারটা খুবই সিরিয়াস। এটা উৎসব নয়।” উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এর আগে আহ্বান জানিয়েছিলেন, ১১ থেকে ১৪ই এপ্রিল অবধি ‘টিকা উৎসব’ পালন করুন। রাহুল এদিন তাঁকেই কটাক্ষ করেন। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল প্রশ্ন তোলেন, “মহারাষ্ট্র সহ বিভিন্ন রাজ্যে ভ্যাকসিনের অভাবে যখন টিকা দেওয়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, তখন বিদেশে ভ্যাকসিন পাঠানো হচ্ছে কেন?” তাঁর কথায়, “দেশের মানুষের জীবন বিপন্ন করে বিদেশে ভ্যাকসিন পাঠানো কি ঠিক? কেন্দ্রের উচিত কোনও বৈষম্য না করে সব রাজ্যকেই সাহায্য করা।”
উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের অনেক বেসরকারি হাসপাতালে সোমবার থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া বন্ধ রয়েছে। ওই হাসপাতালগুলিতে প্রতিষেধকের স্টক শেষ হয়ে গিয়েছে। ফের কবে ভ্যাকসিন আসবে তাদের জানা নেই। হাসপাতালগুলির বাইরে নোটিশ টাঙিয়ে বলা হয়েছে, ভ্যাকসিন আউট অব স্টক। যাঁরা ওই হাসপাতালগুলিতে ভ্যাকসিন নিতে এসেছিলেন, তাঁদের বলা হয়েছে, আগে খবর নিয়ে জানবেন ভ্যাকসিন এসেছে কিনা, তারপরে আসবেন। গাজিয়াবাদের ইন্দিরাপুরমে এলওয়াইএফ হাসপাতালের ডায়রেক্টর অলোক গুপ্ত বলেন, “সোমবার থেকে আমাদের ভ্যাকসিন নেই। তাই আমরা টিকা দেওয়া বন্ধ করেছি। ভ্যাকসিনের পরবর্তী স্টক কবে আসবে জানা নেই। “দীপক গুপ্ত নামে ৪৯ বছর বয়সী এক ব্যবসায়ী অনেক চেষ্টা করেও ভ্যাকসিন নিতে পারেননি। তিনি বলেন, “আমি তিন-চারদিন ধরে বিভিন্ন ভ্যাকসিনেশন সেন্টারে গিয়েছি। কোথাও ভ্যাকসিন পাইনি।”
আরও দুশ্চিন্তার বিষয়, প্রতিষেধকের অভাবে বন্ধই হয়ে গিয়েছে মহারাষ্ট্রের ২৬টি টিকাকরণ কেন্দ্র। তার মধ্যে ২৩ টি অবস্থিত নভি মুম্বইতে। ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির প্রধান শরদ পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনের সঙ্গে কথা বলেছেন। মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপী বলেন, বুধবার সন্ধ্যা থেকে সাতারা, সাঙ্গলি এবং পানভেল অঞ্চলে ভ্যাকসিন দেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের রাজ্যের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। মহারাষ্ট্রে প্রতি সপ্তাহে ৪০ লক্ষ ডোজ চাই। প্রতি মাসে চাই ১.৬ কোটি ভ্যাকসিন। রাজেশ তোপীর বক্তব্য, “মহারাষ্ট্রের লোকসংখ্যা গুজরাতের দ্বিগুণ। গুজরাত এক কোটি ডোজ পেয়েছে, আমরাও এক কোটি ডোজ পেয়েছি।”