দেশের একাধিক শহরে পেট্রোলের দাম ছাড়িয়েছে সেঞ্চুরির গণ্ডি। ডিজেলের অবস্থাও তথৈবচ। সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে। স্বাভাবিক ভাবেই কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তোলা শুরু করেছে বিরোধীরা। পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে গতকালই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। স্পষ্ট ভাষায় কংগ্রেস সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রীকে বিঁধে লিখেছেন, সরকার সাধারণ মানুষের দুর্দশার কথা না ভেবে নিজের লাভের হিসেব করছে। আজ সকালে রাহুল গান্ধীও জ্বালনির মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রের মোদী সরকারকে বিঁধেছেন।
কিন্তু প্রশ্ন হল, জ্বালানির উপর কেন্দ্র এবং রাজ্য দুই সরকারই কর আদায় করে। তাহলে কেন শুধু কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে? বিরোধী শিবিরের দাবি, এর কারণ হল পেট্রোপণ্যের উপর করের পরিমাণ। রাজ্য সরকারগুলির তুলনায় পেট্রোপণ্যে কেন্দ্র অনেক বেশি কর নেয়। গতকালই রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বলছিলেন, ‘এই মুহূর্তে প্রতি লিটার পেট্রোলে ৩২.৯০ টাকা ও ডিজেলপিছু ৩১.৮০ টাকা কর এবং সেস নিচ্ছে কেন্দ্র। সেখানে রাজ্য সরকার প্রতি লিটার পেট্রলে মাত্র ১৮.৪৬ টাকা ও ডিজেলে লিটারপিছু মাত্র ১২.৫৭ টাকা কর নিচ্ছে।’ বিরোধীদের দাবি, পেট্রোপণ্য থেকে কেন্দ্রের আয় যেহেতু রাজ্য সরকারের তুলনায় অনেক বেশি। তাই মূল্য নিয়ন্ত্রণ করার দায়ও কেন্দ্রের উপর বেশি বর্তায়। স্বাধীনতার পর থেকে কেন্দ্রই মূলত পেট্রপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করে।
তাছাড়া, ঊর্ধ্বমুখী জ্বালানির মূল্য নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েকটি রাজ্য ইতিমধ্যেই উদ্যোগী হয়েছে। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস শাসিত রাজস্থান এবং ছত্তিশগড় পেট্রপণ্যের উপর করছাড় দিয়েছে। বিজেপি শাসিত আসাম করোনাকালে পেট্রোল এবং ডিজেলের উপর যে অতিরিক্ত সেস বসিয়েছিল, তা প্রত্যাহার করেছে। একধাক্কায় অনেকটা দাম কমিয়েছে মেঘালয় সরকার। গতকাল বাংলার মমতা সরকারও পেট্রোল-ডিজেলে একটাকা করে সেস কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সব মিলিয়ে ১৮টি রাজ্য ইতিমধ্যেই পেট্রোপণ্যে ভ্যাট কমিয়েছে। একের পর এক রাজ্য যখন জ্বালানির দাম কমাতে এভাবে উদ্যোগী হচ্ছে, তখন মোদী সরকার কার্যত নির্বিকার। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে কেন্দ্রের সদিচ্ছা নিয়ে।