বাংলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চালু করা সমাজকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলি বারবারই আন্তর্জাতিক স্তরে সমাদৃত হয়েছে। কিন্তু তারপরেও বাংলার কাজের প্রশংসা সেভাবে মেলে না কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দলের তরফে। এমনকী স্বাধীনতা দিবস বা সাধারণতন্ত্র দিবসের মতো জাতীয় অনুষ্ঠানেও বাংলাকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। যেমন ২০১৮ সালে ‘একতাই সম্প্রীতি’ থিমের ট্যাবলো দিল্লীর রাজপথে জায়গা পায়নি। ২০২০ সালেও রাজ্যের পাঠানো প্রকল্পের ট্যাবলোকেও গ্রহণ করা হয়নি। তবে এ বছর প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে ফের জায়গা পাচ্ছে বাংলার ট্যাবলো। সেই ট্যাবলোর থিম মমতার স্বপ্নের ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্প। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের সাইকেল বিলির যে প্রকল্প গোটা বিশ্বের প্রশংসা আদায় করে নিয়েছে। কেন্দ্রের তরফে এ খবর জানানোর পাশাপাশি ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পের বেশ প্রশংসাও করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের সমস্ত সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের সরকারের তরফে বিনামূল্যে সাইকেল প্রদান। প্রত্যন্ত এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে অনেক সময়েই দেখা যায়, স্কুল যেতে অনেকটা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পড়ুয়াদের। অনেক সময়ে যাতায়াতের ধকল সহ্য করতে না পেরে স্কুলছুটের প্রবণতাও দেখা দেয় তাদের মধ্যে। এই সমস্যা মেটাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের সবাইকে সাইকেল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যাতে সেই সাইকেলে চড়ে দ্রুত তারা স্কুলে যেতে পারে। অসময়ে মাঝপথ থেকে পড়াশোনাও ছাড়তে না হয়। তাছাড়া সাইকেলে যাতায়াতের খরচও প্রায় শূন্য। ফলে পরিবহণে অতিরিক্ত খরচ নিয়েও চিন্তিত হতে হবে না কাউকে। এক প্রকল্পে একাধিক সুবিধার কথা মাথায় রেখে ২০১৫ সালে ‘সবুজ সাথী’ চালু হয় বাংলায়।
এই প্রকল্পে সাইকেল বিলির পর রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকায় স্কুলছুটের সংখ্যা অনেক কমেছে। পড়াশোনায় উৎসাহ বেড়েছে গ্রামাঞ্চলের ছেলেমেয়েদের। ২০১৭ সালে জাতীয় স্তরে পুরস্কৃত হয় ‘সবুজসাথী’ প্রকল্প। এরপর ২০১৮, ১৯ সালে বিশ্বের দরবারে স্বীকৃতি লাভ করে এই প্রকল্প। ধারাবাহিকভাবে ‘সবুজ সাথী’র সাফল্যের নিরিখে এবারের সাধারণতন্ত্র দিবসে তাকেই তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য। যাকে ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্র। কীভাবে সাজানো হবে ট্যাবলো? জানা গিয়েছে, সামনে এক স্কুলছাত্রীর ছবি দিয়ে সাজানো হবে। এরপর সাইকেল নিয়ে পড়ুয়ারা স্কুলে যাচ্ছে – এধরনের কয়েকটি ছবি থাকবে, যার মাধ্যমে তুলে ধরা হবে প্রকল্পের সুবিধা। সঙ্গে শোনা যাবে রবীন্দ্রসংগীত – ‘আমরা নূতন যৌবনেরই দূত।’ এর মাধ্যমে স্কুলশিক্ষাকে উন্নত করতে বাংলা প্রশাসনের অবদান প্রকাশ পাবে।