দীর্ঘ অপেক্ষায় ইতি টেনে দেশে পৌঁছেছে করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক টিকা। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। দিন তিনেকের মধ্যেই দেশজুড়ে শুরু হবে টিকাকরণ। সরকারি সূত্র অনুযায়ী, দৈনিক ১৩ লক্ষ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে ভারতে। শুরুতে অবশ্য সরাসরি আমজনতাকে এই টিকা দেওয়া হবে না। শুরুতে টিকা পাবেন ৩ কোটি স্বাস্থ্যকর্মী এবং ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার। তারপর অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বেশি বয়স্ক এবং ক্রনিক রোগে আক্রান্তদের এই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। তারপর টিকা পাবেন সাধারণ নাগরিকরা। অপেক্ষা এখনও অনেকটা সময়ের। কিন্তু এখন প্রশ্ন হল, সাধারণ মানুষ কি আদতেই করোনার টিকা নিতে আগ্রহী ? সে নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্নচিহ্ন।
সম্প্রতির এক সমীক্ষা অনুযায়ী জানা গিয়েছে, দেশে টিকাকরণ শুরু হলেও, এখনই ভ্যাকসিন নিতে নারাজ প্রায় ৩২ শতাংশ মানুষ। ভ্যাকসিনের নিরাপত্তা নিয়ে পুরোপুরি নিশ্চিন্ত নন তাঁরা। মূলত শহরাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিয়ে এই সমীক্ষা করেছে YouGov। সমীক্ষা জানিয়েছে, এই মুহূর্তে অধিকাংশ ভারতীয় করোনার ভ্যাকসিন নিতে প্রস্তুত হলেও এর একটা বড় অংশ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে চিন্তিত। প্রায় ৪১ শতাংশ মানুষ চাইছেন ভ্যাকসিন নেওয়ার আগে কয়েকমাস অপেক্ষা করতে। ৩৩ শতাংশ মানুষ অবশ্য ভ্যাকসিন হাতে পেলেই তা নেওয়ার পক্ষপাতী। ১৩ শতাংশ মানুষ স্বেচ্ছায় ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহীই নন, তবে সরকার বাধ্যতামূলক করলে নিতে রাজি আছেন। ১১ শতাংশ মানুষ বলছেন, একমাত্র কর্মস্থল থেকে ভ্যাকসিন নেওয়াটা বাধ্যতামূলক করলেই তারা টিকাকরণে অংশ নেবেন। টিকাকরণের ক্ষেত্রে অবশ্য বিদেশি ভ্যাকসিনের থেকে দেশি ভ্যাকসিনে আস্থা বেশি মানুষের। তাঁরা ভারতে তৈরি ভ্যাকসিনেই বেশি স্বচ্ছন্দ, জানিয়েছেন ৫৫ শতাংশ মানুষ।
উল্লেখ্য, কোভিড ভ্যাকসিনের খরচ বহন করা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিস্তর বিতর্ক হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৩ কোটি স্বাস্থ্যকর্মী এবং ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারদের বিনামূল্যে করোনার টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু দেশের প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষই মনে করছেন, সরকারের বিনামূল্যে করোনার ভ্যাকসিন বিলি করা উচিত। ৩৬ শতাংশ মানুষ মনে করছেন, অন্তত গরিব মানুষের মধ্যে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন বিতরণ করা উচিত। প্রত্যেকের উচিত নিজের টিকাকরণের খরচ বহন করা, এরকম মনে করছেন ১৪ শতাংশ জনগণ।