রবিবার ছুটির দিনে নিজের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে সভাস্থির করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ তথা যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে তিনি বিরোধীদের জবাব দেবেন, তা স্পষ্টই ছিল। আর সেই ভবিষ্যদ্বাণীই যেন সত্যি হল। আজকের জনসভার মঞ্চ থেকে একের পর এক বক্তৃতার মাধ্যমে বর্তমান বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে বেনজির আক্রমণ করলেন ঘাসফুল শিবিরের যুবরাজ। তবে শুভেন্দুর পাশাপাশি এদিনের সভামঞ্চ থেকে জেপি নাড্ডা, দিলীপ ঘোষ-সহ বিজেপির একাধিক নেতামন্ত্রীর বিরুদ্ধেও জোরাল আক্রমণ শানান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে বারবার বাংলাকে ‘সোনার বাংলা’ হিসাবে গড়ে তোলার কথা শোনা যাচ্ছে বিজেপি নেতামন্ত্রীদের মুখে। হেস্টিংসে বিজেপি কার্যালয়ে গতকাল শুভেন্দু অধিকারীও দাবি করেছেন, সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য বাংলাকে মোদীর হাতে তুলে দিতে হবে। ডায়মন্ড হারবারের সভা থেকে তারই পাল্টা দিলেন অভিষেক। তিনি বলেন, “বাংলার মানসম্মান, কৃষ্টিকে বিক্রি করে দিয়ে এরা বাংলাকে মোদীর হাতে তুলে দেওয়ার কথা বলছে। বাংলা কী কোনও বস্তু যে যার তার হাত তুলে দিতে হবে?” শুভেন্দুর দিকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে অভিষেকের হুঁশিয়ারি, “এক বাপের ব্যাটা হলে শুধু ডায়মন্ড হারবারটাই তুলে দেখাক।”
এছাড়াও শুভেন্দুকে ‘উপসর্গহীন বেইমান’ বলেও কটাক্ষ করেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ। গত ২১ বছর ধরে তৃণমূলের হয়ে কাজ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। ছিলেন মন্ত্রী, বিধায়ক। ঘাসফুল শিবিরেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ পদের অধিকারী ছিলেন। তবে ২১ বছর তৃণমূলে থাকার জন্য ‘লজ্জিত’ বলে সম্প্রতি দাবি করেন শুভেন্দু। অধিকারী পরিবারের সন্তান দলবদল করেছেন। কিন্তু শুভেন্দুর বাবা এবং ভাই এখনও তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। সেই প্রসঙ্গ টেনেও ‘লজ্জিত’ ইস্যুতে শুভেন্দুকে বিঁধলেন অভিষেক। তাঁর দাবি, “বাবা, ভাইয়ের সঙ্গে তো এখনও এক বাড়িতেই থাকেন। লজ্জা করে না?”
এছাড়াও ‘তোলাবাজ ভাইপো’ বলেও বারবার অভিষেককে খোঁচা দিয়েছেন শুভেন্দু। এদিন তারও পাল্টা জবাব দিলেন তিনি। তৃণমূল সাংসদের কথায়, ‘‘নারদা ভিডিওতে তোমাকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে। নারদায় টাকা নিয়েছিলে তুমি। তোলাবাজ তুমি। সারদাতেও তোমার নাম রয়েছে। আমি নারদাতেও নেই। সারদাতেও নেই। তাই আমি তোলাবাজ প্রমাণ করতে পারলে ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করে দাও। আমি নিজে গিয়ে মৃত্যু বরণ করব। চ্যালেঞ্জ রইল। ইডি, সিবিআইয়ের কাছে যেতে হবে না।”