করোনা সংকট কাটেনি এখনও। এই অবস্থায় সাধারণ মানুষের জীবনযাপন খানিকটা কঠিনই হয়ে উঠেছে। গত কয়েকমাস ধরেই রুটিরুজি নিয়ে অত্যন্ত অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে। এই অবস্থায় দেশবাসীর পাশে দাঁড়াতে কেন্দ্রীয় খাদ্য প্রকল্প ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা’য় এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বিনামূল্যে খাদ্যপণ্য বণ্টনের সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য। এবার এই পরিষেবার মেয়াদ আরও বৃদ্ধির আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের আবেদনকে সমর্থন জানিয়ে তাঁর অনুরোধ, আরও চার মাস বিনামূল্যে রেশনের ব্যবস্থা করুক কেন্দ্র।
করোনা সংক্রমণের জেরে দেশজুড়ে লকডাউন চালু হওয়ার পর ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা’য় প্রথম দফায় তিনমাস বিনামূল্যে দেশবাসীকে রেশন দেওয়ার ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। পরে তা আরও কয়েকমাস বাড়ানো হয়। চাল, ডাল, ছোলার মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী বিভিন্ন রাজ্যে বণ্টন করা হচ্ছিল কেন্দ্রের তরফে। এই রেশন সামগ্রীর মান নিয়ে রাজ্যের বেশ কিছু অভিযোগও ছিল। সেসব সত্ত্বেও রাজ্যবাসী প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ রেশন পাচ্ছিলেন কেন্দ্র থেকে। তবে রাজ্যের তরফে সময়মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কেন্দ্রকে সরবরাহ না করার অভিযোগে নভেম্বরের বরাদ্দ রেশন সামগ্রী পাঠানো সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেয় কেন্দ্র। এ নিয়ে আরেকপ্রস্থ সংঘাতেও জড়ায় কেন্দ্র-রাজ্য।
তবে সেই দ্বন্দ্ব ভুলে রেশন ডিলারদের পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন। তাতে তাঁর আবেদন যে নভেম্বর নয়, করোনা পরিস্থিতিতে ২০২১-এর মার্চ মাস পর্যন্ত বিনামূল্যে রেশন দিক কেন্দ্র। অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন এই মর্মেই একটি আবেদন জানানো হয়েছিল। সেই আবেদনপত্র সৌগত রায় মোদীকে লেখা নিজের চিঠিতে রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এমনিতে রাজনৈতিক মতানৈক্য যতই থাক, দেশের স্বার্থে তুচ্ছ সংঘাত ভুলে এভাবে যৌথভাবে কাজ করাই যে গণতান্ত্রিক কাঠামোর দস্তুর, সেটা সৌগত রায়ের মতো দুঁদে রাজনীতিবিদ বোঝেন বেশ ভালই। তবে তাঁর আবেদনে সাড়া দিয়ে বিনামূল্যে রেশন বণ্টনের সময়সীমা আগামী বছর পর্যন্ত বৃদ্ধিতে কেন্দ্রের সবুজ সংকেত মেলে কি না, সেদিকে অবশ্যই নজর থাকবে সব মহলের।