গোটা বিশ্বেই ভয়ঙ্কর করোনা সংক্রমণের কারণে গত মার্চ মাস থেকেই বন্ধ রয়েছে দেশের সমস্ত স্কুল-কলেজ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আজ বিশ্বব্যাঙ্ক জানাল, এত মাস ধরে স্কুল বন্ধ থাকার ফলে আগামী দিনে ভারতীয় অর্থনীতির ক্ষতি হতে পারে ৪০ হাজার কোটি ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় তার পরিমাণ ২৯ লক্ষ কোটি টাকার বেশি। এছাড়া স্কুল বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনারও ব্যাপক ক্ষতি হবে।
বিশ্বব্যাঙ্ক জানিয়েছে, অতিমহামারীর মধ্যে স্কুল বন্ধ থাকায় সামগ্রিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ায় ক্ষতি হবে ৬২ হাজার ২০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ ৪৫ লক্ষ কোটি টাকার বেশি। এমনকি ক্ষতির পরিমাণ ৮০ হাজার কোটি ডলার বা ৬৫ লক্ষ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। এর ফলে ভারত-সহ পুরো দক্ষিণ এশিয়ারই জিডিপি কমবে।
এদিন বিশ্বব্যাঙ্ক যে রিপোর্ট পেশ করে, তার নাম ‘বিটেন অর ব্রোকেন? ইনফরমালিটি অ্যান্ড কোভিড নাইনটিন ইন সাউথ এশিয়া’। তাতে বলা হয়েছে, অতিমহামারীর জন্য ভয়ঙ্কর আর্থিক মন্দার কবলে পড়তে চলেছে দক্ষিণ এশিয়া। সেই মন্দার প্রভাব সহজে কাটিয়ে ওঠা যাবে না। এরপর বলা হয়েছে, “দক্ষিণ এশিয়ায় স্কুলগুলি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এর ফলে ছাত্রছাত্রীদের গুরুতর ক্ষতি হবে। প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি স্কুলের ৩৯ লক্ষ ১০ হাজার ছেলেমেয়ে এখন স্কুলে যাচ্ছে না। বেশিরভাগ সরকার চেষ্টা করছে যাতে স্কুল বন্ধ থাকার ফলে ছাত্রছাত্রীদের বেশি ক্ষতি না হয়। কিন্তু দূরশিক্ষার মাধ্যমে সব ছাত্রকে পড়ানো খুবই কঠিন কাজ।”
বিশ্ব ব্যাঙ্কের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, “বেশিরভাগ দেশে গত মার্চ থেকে স্কুল বন্ধ। এতদিনে কোনও কোনও দেশে স্কুল খুলতে চলেছে। দু’-একটি দেশে স্কুল খুলেও গিয়েছে। ওই সব দেশে ছাত্রছাত্রীরা পাঁচ মাস স্কুলে যায়নি। ওই সময় তাঁরা নতুন কিছু শিখতে পারেনি তো বটেই, এমনকি আগে যা শিখেছিল, তারও অনেক কিছু ভুলে গিয়েছে।” এছাড়াও সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, শিক্ষায় যে ক্ষতি হল, ভবিষ্যতে তার প্রভাব পড়বে চাকরিতে। দক্ষিণ এশিয়ার শিশুরা প্রত্যেকে সারা জীবনে গড়ে ৪৪০০ ডলার করে কম আয় করবে।