কৃষি বিল থেকে সাংসদ বহিষ্কার, জিএসটির প্রাপ্য থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানো, সোমবার একাধিক ইস্যুতে কেন্দ্রের মোদী সরকারকে তুলোধোনা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্র ‘হিটলারি কায়দায়’ সরকার চালাচ্ছে বলে তীব্র সমালোচনা করে মমতার হুঁশিয়ারি, দেশজুড়ে আন্দোলন গড়ে উঠবে। বাংলা গোটা দেশকে পথ দেখাবে। কৃষি বিল ও সাংসদদের বহিষ্কারের বিরোধিতা করে আগামীকাল, মঙ্গলবার থেকে তৃণমূল আন্দোলনে নামছে বলেও জানিয়ে দিলেন নেত্রী।
সোমবার নবান্নের সভাঘরে সাংবাদিক বৈঠকে করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকেই কৃষি বিলের তীব্র নিন্দা করেন তিনি। মমতা বলেন, ‘ভুঁইফোড়-জোতদারদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে দিচ্ছে কেন্দ্র। চাষিদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করছে।’ কেন্দ্রকে ‘মজুতদার’, ‘কালোবাজারির সরকার’ বলে কটাক্ষ করে মমতা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ‘দেশে এবার খাদ্যের দুর্ভিক্ষ আসতে চলেছে।’ কেন্দ্রীয় সরকারকে সরাসরি তাঁর প্রশ্ন, ‘চাষিদের জন্য কী করেছেন? কেউ কেউ দাবি করছেন, তাঁরাও কৃষক। কোনওদিনও লাঙল দিয়ে দেখেছেন?’ রবিবার কৃষি বিলের সমর্থনে সাংবাদিক বৈঠকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিজেকে কৃষক বলে দাবি করেছিলেন। এদিন নাম না করেই তাঁকে কটাক্ষ করে মমতার শ্লেষ, ‘কেঁচো ধরতে পারে না, অজগর ধরতে এসেছে!’
গত রবিবারকে ‘ব্ল্যাক সানডে’ বলে উল্লেখ করে সাংবাদিক বৈঠক থেকে সাংসদদের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, ‘আপনাদের নিয়ে আমি গর্বিত। আপনাদের পাশে আছি।’ এ বিষয়ে বিজেপির সমালোচনা করে তৃণমূল সুপ্রিমোর অভিযোগ, ‘সংসদীয় গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। হিটলারি কায়দায় দেশ চলছে।’ এরপরই বিজেপির বিরুদ্ধে বিরোধীদের একজোট হওয়ার ডাক দেন মমতা। দেশজুড়ে আন্দোলন শুরুর কথা বলেন।
রাজ্যসভায় সাংসদদের বহিষ্কারের বিরোধিতা করে মঙ্গলবার থেকে রাজ্যে আন্দোলনে নামছেন তৃণমূল কর্মীরা। সেই কর্মসূচিও এদিন সাংবাদিক বৈঠক থেকে জানিয়ে দেন মমতা। ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধর্না কর্মসূচিতে অংশ নেবেন তৃণমূলের মহিলা নেতা,কর্মীরা। বুধবার প্রতিবাদে সামিল হবে ছাত্রসমাজ। আর তারপর থেকে প্রতিবাদ জানাবে তৃণমূলের কৃষক সংগঠন। এদিকে সোমবার সারারাত সংসদ চত্বরে ধর্না দেবেন ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং দোলা সেন। এ দিন মমতা বলেন, ‘বাংলাই বারবার পথ দেখায়। বাংলাই দেশের আমজনতাকে নিয়ে লড়ছে। তৃণমূল পিছনের সারিতে থেকে কাঁসর-ঘণ্টা বাজাবে। সামনের সারিতে থাকবে সাধারণ মানুষ।’