একই দিনে একটি সুসংবাদ এবং একটি দুঃসংবাদ টিকটক কর্তৃপক্ষের জন্য। দুঃসংবাদ হল, ভারতের পথ ধরে এবার আমেরিকাতেও নিষিদ্ধ হচ্ছে এই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং অ্যাপটি। শুক্রবার সেই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর সুসংবাদ হল, আমেরিকায় নিষিদ্ধ হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপটির মালিকানা কিনে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করল বিশ্বখ্যাত তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা মাইক্রোসফট। তাঁরা নাকি টিকটক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাবার্তাও শুরু করেছে। এই চুক্তিটি হলে লোকসানের হাত থেকে বেচে যাবে চীনা সংস্থা বাইটডান্স।
সম্প্রতি, টিকটকের তথ্য নিরাপত্তা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে ভারতে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দাদের ব্যক্তিগত তথ্য এই অ্যাপের মাধ্যমে চীনের হাতে চলে যাচ্ছে বলে ধারণা মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগের। এমনকী এই অ্যাপটিকে হাতিয়ার করে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও চীন হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছে বলে দাবি করা হয়েছে মার্কিন গোয়েন্দাদের তরফে। টিকটকে’র উপর চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাব ও অ্যাপটি ব্যবহার করে জনমত প্রভাবিত করার অভিযোগ এনে সম্প্রতি মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার ডিরেক্টর জন ব়্যাটক্লিফকে একটি চিঠি দিয়েছেন মার্কিন সেনেটের বেশ কয়েকজন সদস্য। সেখানে লেখা ছিল, ‘টিকটকের উপর চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাব নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। অ্যাপটি ব্যবহার করে মার্কিন জনতার মধ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণে বিভেদ তৈরি করার চেষ্টা করতে পারে চীন।’ এছাড়াও, মার্ক রুবিও, টম কটন-সহ সাতজন রিপাবলিকান সেনেটর আরও অভিযোগ জানিয়েছেন যে, টিকটক থেকে গ্রাহকদের তথ্য চলে যাচ্ছে চীন সরকারের কাছে। তাই আমেরিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এই মর্মে যথাযত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
মার্কিন সেনেটরদের এই দাবির মধ্যেই শুক্রবার ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ‘আমরা আমেরিকা থেকে টিকটক নিষিদ্ধ ঘোষণা করছি।’ শনিবারই জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে এই অ্যাপটি নিষিদ্ধ করার নির্দেশিকা জারি করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এর আগেই অবশ্য একটা আশ্চর্য ঘটনা ঘটে। চীনা সংস্থা বাইটডান্সের কাছ থেকে আমেরিকায় টিকটকের মালিকানা কিনে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে বিশ্বখ্যাত তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা মাইক্রোসফট। তাঁরা নাকি টিকটিক কর্তৃপক্ষের কাছে কয়েক হাজার কোটি টাকায় অ্যাপটি কিনে নেওয়ারও আগ্রহ দেখায়। এমনকী আমেরিকার সরকারও নাকি চাইছিল, বাইটডান্সের হাত থেকে এই সংস্থার মালিকানা বিশ্বখ্যাত মাইক্রোসফটের হাতে যাক। সেজন্য টিকটকের উপর চাপও সৃষ্টি করছিল মার্কিন প্রশাসন। এরই মধ্যে প্রেসিডেন্ট এই অ্যাপটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দিলেন।