দুই দেশের কমান্ডার স্তরের বৈঠকে সংঘাত এড়াতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে সেনা পিছু হঠবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল৷ আলোচনায় সহমতে পৌঁছলেও বাস্তবে যে সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া থমকে রয়েছে, ভারত এবং চীনের বিবৃতিতেই তা স্পষ্ট হয়ে গেল৷ ভারতের বিদেশমন্ত্রকের প্রকাশিত বিবৃতিতে সরাসরি দাবি করা হয়েছে, কমান্ডার স্তরে বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে উদ্যোগী হোক চীন৷
ভারত এবং চীনের মধ্যে আলোচনা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে সীমান্ত বিষয়ক কার্যকরী পদক্ষেপ নির্ধারণের বৈঠকে সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমন নিয়ে এই বিষয়গুলি উঠে আসে৷ প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে কূটনৈতিক স্তরের এই বৈঠক চলে বলে একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে৷ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার পশ্চিম অংশে দু’ দেশের তরফে সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া কতদূর এগিয়েছে, এই বৈঠকে তারও পর্যালোচনা হয়৷
এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে দাবি করা হয়েছে, যে এলাকাগুলিতে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহারের জন্য সহমতের ভিত্তিতে নেওয়া সিদ্ধান্তকে কার্যকর করার জন্য বৈঠকে চীনের কাছে দাবি জানিয়েছে ভারত৷ ভারতের বিদেশমন্ত্রকের তরফে জারি করা বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ‘এখনও পর্যন্ত সিনিয়র মিলিটারি কমান্ডারদের মধ্যে হওয়া বৈঠকে যে সিদ্ধান্তগুলি নেওয়া হয়েছিল, দুই দেশেরই সেগুলি কার্যকর করা গুরুত্বপূর্ণ৷’ এর থেকেই স্পষ্ট, চীন এখনও কমান্ডার স্তরে হওয়া বৈঠকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি বলেই মনে করছে ভারত৷
গোগরা এবং হটস্প্রিং এলাকা থেকে কিছু চিনা সেনা পিছু হঠলেও প্যাংগং লেক এবং ডেপস্যাংয়ের সমতল এলাকা থেকে এখনও চিনা বাহিনী পিছু হঠেনি বলেই সূত্রের দাবি৷ ফলে সংঘাত এড়াতে এখনও চীনের তরফে অনেক কিছুই করা প্রয়োজন বলে মনে করছে ভারত৷
চীন আরও দাবি করেছে, ভবিষ্যতে আরও বৈঠক এবং কমান্ডার স্তরে আলোচনার মধ্যে দিয়েই পরস্পরের প্রতি আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি এবং সীমান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠার দিকে এগিয়ে যাওয়া হবে৷ তবে চীন ইতিবাচক পদক্ষেপের কথা বললেও ভারতের দিক থেকে বৈঠক সম্পর্কে অবগত কূটনৈতিক সূত্ররা সেই দাবি মানতে নারাজ৷ বিশেষজ্ঞরাও মনে করছেন, লাদাখে যে এলাকাগুলি মূল সংঘাতের কারণ, সেখানেই এখনও ঘাঁটি গেড়ে বসে রয়েছে চীনা সেনা৷ ফলে সেনা প্রত্যাহারের গোটা প্রক্রিয়াই কার্যত থমকে গিয়েছে৷