করোনাকে একমাত্র ঠেকানোর অস্ত্র হল মাস্ক আর স্যানিটাইজার আর সোশ্যাল ডিসটেন্স। স্যানিটাইজার আর সোশ্যাল ডিসটেন্স তো মানা গেল, কিন্তু বিপত্তি বাড়াচ্ছে মাস্ক। আর এই মাস্ক নিয়েই যত সমস্যা। চিরকাল যে নাক, গাল, ঠোঁট খোলা হাওয়ায় মুক্ত পরিবেশে দিব্যি খোশমেজাজে শ্বাস নিত, সে কেন রাখঢাক! তাই তারাও রে রে বলে বিদ্রোহ করছে বেশিক্ষণ মাস্কের অত্যাচার সহ্য করতে হলেই নাক, মুখ জুড়ে ছোট, বড় লালচে-গোলাপি ব্রণ, র্যাশ উঁকি দিচ্ছে। খসখসে ত্বক, চুলকানি, ঠোঁটের চারপাশে লাল লাল গুটির মতো দাগ।
ডারমাটোলজিস্টরা এই মাস্কঘটিত ব্রণদের নাম দিয়েছেন ‘মাস্কনে’ (Maskne)। অর্থাৎ মাস্কের কারণে যে ব্রণ বা অ্যাকনে। একটানা মাস্ক পরে থাকলে নাক, মুখে খোলা হাওয়া খেলা করতে পারে না। ঘাম, ময়লা জমে র্যাশ হতে শুরু করে। তার উপরে বার বার হাত দিয়ে মাস্কের কান ধরে কখনও নাকের উপরে তোলা, আবার কখনও থুতনির নীচে নামানো, এইসবেই যত সমস্যা। গোটা নাক-মুখ জুড়ে লালচে দাগ, ব্রণ উঠছে।
ডার্মাটোলজিস্টরা বলছেন, অনেকে আবার মাস্ক সরিয়ে বার বার মুখে হাত দেন, যার ফলেও হাতের ময়লা ঠোঁটে, নাকে লেগে যায়। তার উপর আবার মাস্ক চাপিয়ে দিলে ঘাম জমে সেই জায়গার ত্বকের বারোটা বেজে যায়।
ডার্মাটোলজিস্টরা বলছেন, যাদের ত্বক খুব শুষ্ক, সেনসিটিভ তাদের সমস্যা আরও। বিশেষত যদি এগজিমা বা সোরিয়াসিসের মতো ক্রনিক ত্বকের রোগ থাকে বা অ্যালার্জিজনিত অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস তাহলে ত্বকের যত্ন একটু বেশিই নিতে হবে। স্যানিটাইজার ব্যবহার করার পরে হাতে নিয়ম করে ময়শ্চারাইজার বা নারকেল তেল লাগাতে হবে। মুখে ভারী মেকআপ একদম নয়। তৈলাক্ত প্রসাধনী এই সময় ব্যবহার না করাই উচিত। বদলে ত্বক অনুযায়ী হাল্কা ময়শ্চারাইজার, রোদে বের হলে সানস্ক্রিন (অবশ্যই ত্বকের ধরন অনুযায়ী) ব্যবহার করতে হবে। ছোট ছোট ব্রণ ঠোঁট আর নাকের চারপাশে দেখা গেলে চন্দনের প্রলেপ দেওয়া যেতে পারে। তাতে জ্বালা বা চুলকানি অনেকটাই কমবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিমপাতাও খুব কাজে দেয় মাস্কনের সমস্যা রুখতে। নিমপাতা বাটা নাক বা মুখের চারপাশে লাগিয়ে রাখলে আরাম মেলে। তাই করোনায় এবার ত্বকের ও যত্ন নিতে হবে।