প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণ। কিন্তু এই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব এমনই বলছে হু। এই প্রসঙ্গে মুম্বইয়ের ধারাভির উদাহরণ দিয়েছে তারা। সম্প্রতি ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত এই ভাইরাস মোকাবিলা কার্যত অসম্ভব বলেই বারবার জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস আধানম শুক্রবার বলেছেন, “বেশ কিছু জায়গার পরিস্থিতি দেখে বোঝা যাচ্ছে এই ভাইরাসের সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। ইতালি, স্পেন, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারত তথা এশিয়ার সবথেকে বড় বস্তি ধারাভির উদাহরণ টেনেছেন তিনি। আধানম বলেন, এই জায়গাগুলি দেখিয়ে দিয়েছে, সংক্রমণ যতই বাড়ুক, কড়া পদক্ষেপ নিলে তা মোকাবিলা করা সম্ভব”।
জেনেভাতে হু প্রধান বলেন, “গত ছ’সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু বিশ্বে এমন অনেক জায়গা আছে যেখানে দেখা গিয়েছে সংক্রমণ যতই বাড়ুক না কেন, কড়া পদক্ষেপ নিলে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। মুম্বইয়ের কাছে ঘনবসতিপূর্ণ ধারাভিতেও তা দেখা গিয়েছে। যেখান থেকে গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা করা গিয়েছিল, সেখানে টেস্টিং অর্থাৎ নমুনা পরীক্ষা, ট্রেসিং অর্থাৎ সংক্রমণের উৎস খোঁজা, আইসোলেটিং অর্থাৎ অন্যদের থেকে আলাদা করা ও ট্রিটিং অর্থাৎ চিকিৎসা এই পদ্ধতিতে সংক্রমণের চেনকে ভাঙা সম্ভব হয়”।
মুম্বইয়ের এই এলাকায় করোনা মোকাবিলায় কড়া পদক্ষেপ নিয়েছিল প্রশাসন। কড়া লকডাউন করা হয়। শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবা ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রে বাসিন্দাদের বাইরে যাওয়া বন্ধ করা হয়। সামাজিক দূরত্ব ও অন্যান্য বিধিনিষেধ মেনে চলতে হয়। তারই ফল মেলে। ধীরে ধীরে সংক্রমণ কমতে থাকে।
শুধুমাত্র আক্রান্তের সংখ্যা কমাই নয়, সুস্থতার হারও ক্রমাগত বাড়ছে ধারাভিতে। মঙ্গলবার পর্যন্ত মাত্র ৩৫২ জন অ্যাকটিভ রোগী রয়েছেন সেখানে। অর্থাৎ ১৭৩৪ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। মঙ্গলবার মুম্বইয়ের ধারাভিতে শুধুমাত্র একজন নতুন আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়। প্রশাসনের তরফে বলা হয়, অন্তত সাড়ে ৬ লাখ মানুষ বাস করেন ধারাভিতে। এখনও পর্যন্ত এই বস্তিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩৩৫।
অথচ এক সপ্তাহ আগেই মুম্বইয়ের করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় সবথেকে বড় সমস্যা হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছিল ধারাভিকে। কারণ, সেখানে বেশিরভাগ বাড়িতেই শৌচাগার নেই। বাসিন্দাদের কমন বাথরুম ব্যবহার করতে হয়।