নির্ধারিত সময়ের পরেও দোকান খুলে রেখেছিলেন। এই ছিল তাঁদের অপরাধ। আর তার শাস্তি হিসেবেই তামিলনাড়ুর তুতিকোরিনে পুলিশের মারে প্রাণ খুইয়ে ফেলতে হয় এক ব্যবসায়ী ও তাঁর ছেলেকে। পুলিশি হেফাজতে পি জয়রাজ এবং তাঁর ছেলে জে বেনিকস-এর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি। এরই মধ্যে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। সাথানকুলাম থানার এক মহিলা কনস্টেবল জানিয়েছেন যে সেদিন সারা রাত ধরে ব্যাটন ও লাঠি দিয়ে পেটানো হয় বাবা-ছেলেকে। এই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই মৃত্যু হয় তাঁদের। সেদিন রাতে থানাতেই কর্মরত ছিলেন ওই মহিলা। সবকিছু তাঁর চোখের সামনেই ঘটেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, কোভিড কারফিউ ভঙ্গ করার ‘অপরাধে’ পুলিশি অত্যাচারে পি জয়রাজ এবং জে বেনিকস-এর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এমনকী পুলিশি হেফাজতে পি জয়রাজ এবং তাঁর ছেলে জে বেনিকস-এর মৃত্যুর ঘটনাকে জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার সঙ্গেও তুলনা করছেন অনেকে। আবার রাজ্যের বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা এম কে স্ট্যালিন দাবি করেছেন, যারা এই বর্বরতার জন্য দায়ী, তাদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে। ডিএমকে সাংসদ কানিমোঝি অভিযোগ জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও এই ঘটনায় পুলিশের নিন্দা করেন।
এরই মধ্যে সেদিনের ঘটনায় ওই মহিলা পুলিশকর্মী প্রধান সাক্ষী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। পুলিশি অত্যাচারে পি জয়রাজ এবং তাঁর ছেলে জে বেনিকসের রক্ত থানার টেবিলে ছিটকে গিয়ে লাগে বলে জানান তিনি। তবে বয়ান দেওয়ার পর এখন নিজের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা করছেন ওই পুলিশকর্মী। ম্যাজিস্ট্রেট তাঁর নিরাপত্তার আশ্বাস দিলে তবেই নিজের বয়ান দিয়েছেন তিনি। ওই মহিলা ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। প্রয়োজনে ওই মহিলা পুলিশকর্মীকে আপাতত ছুটিতে থাকতে বলেছে মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি পিএন প্রকাশ এবং বি পুগালেন্ধির ডিভিশন বেঞ্চ। না হলে চাপ সৃষ্টি করে তাঁকে বয়ান বদলাতে বাধ্য করা হতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সেদিনের ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ মুছে দেওয়া হয়েছে বলেও সন্দেহ করছে হাইকোর্ট।