চলতি বছর সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ প্রদর্শন করেই ভারতের ৭১তম প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপন করেছিলেন আমেরিকা প্রবাসী ভারতীয়রা। সেদিন নিউ ইয়র্ক, শিকাগো, স্যান ফ্র্যান্সিসকো, ওয়াশিংটন ডিসি-সহ আমেরিকার ৩০টি শহরে অনাবাসী ভারতীয়রা সিএএ-বিরোধী মিছিলের আয়োজন করেছিলেন। আর এবার মুখ খুলেই ভারতে এনআরসি ও সিএএ প্রয়োগ অসঙ্গত বলে জানিয়ে দিলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বিডেন।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের নভেম্বরে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিপক্ষে প্রার্থী হয়েছেন ডেমোক্র্যাট-এর বিডেন। এবার নির্বাচনের আগেই তিনি বুঝিয়ে দিলেন তিনি যদি প্রেসিডেন্ট হন তাহলে ভারত সম্পর্কে তাঁর অবস্থান ঠিক কী হতে পারে। তাঁর নির্বাচনী প্রচারের ওয়েবসাইটে বিডেন জানিয়েছেন, ভারতের এনআরসি ও সিএএ তিনি সমর্থন করেন না এবং কাশ্মীরের নাগরিকদের অধিকার খর্ব হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। এনআরসি ও সিএএ নিয়ে তাঁর মত, ‘যে দেশের ধর্মনিরেপক্ষতা ও বহু জাতি এবং বহু ধর্ম সমন্বিত গণতন্ত্রের ঐতিহ্য রয়েছে সে দেশে এই পদক্ষেপ (এনআরসি ও সিএএ) অসঙ্গত।’
হিন্দু ধর্মাবলম্বী একটি গোষ্ঠী জো বিডেনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভারত সম্পর্কে তাঁর এই মতামত সম্পর্কে তাঁদের আপত্তি জানিয়ে বিডেনের অভিমত বদলাতে বলেন এবং আমেরিকায় বসবাসরত হিন্দুদের সম্পর্কে তাঁর পরিকল্পনা প্রকাশ করতে বলেন। যদিও বিডেনের পক্ষ থেকে তাদের প্রশ্নের কোনও জবাব দেওয়া হয়নি। ওয়েবসাইটটিতে বলা হয়েছে, ‘কাশ্মীরের জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ভারত সরকারের উচিত সমস্ত রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা। ভিন্নমতের ওপর নিষেধাজ্ঞা, যেমন শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে বাধা দেওয়া বা ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া অথবা তার গতি কমে দেওয়া গণতন্ত্রকে দুর্বল করে দেয়।’
একই সঙ্গে পাকিস্তানের দিক থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গী অনুপ্রবেশ ও কাশ্মীরে হিন্দুদের প্রতি অত্যাচার সম্পর্কে যে বিডেন অবহিত সে কথাও লেখা হয়েছে ওয়েবসাইটে। মুসলমানদের প্রতি জো বিডেনের নীতি সম্পর্কিত অধ্যায়ে আরও বলা হয়েছে যে, মুসলিম প্রধান দেশ অথবা যথেষ্ট পরিমাণে মুসলমান ধর্মালম্বী মানুষ রয়েছেন এমন দেশের ঘটনা দেখে আমেরিকান মুসলমানরা যে বেদনা বোধ করেন সেই বেদনা জো বিডেন অনুভব করেন। এই অধ্যায়ের সঙ্গেই ভারতের কাশ্মীর ও আসামের বিষয়টিকে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর ওয়েবসাইটে লেখা হয়েছে, ‘আসামে জাতীয় নাগরিকপঞ্জীর প্রয়োগ ও তার পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলকে আইনে পরিণত করতে ভারত সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ জো বিডেনকে হতাশ করেছে।’