চীনের সঙ্গে সংঘর্ষের আবহে রাশিয়া যাচ্ছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। আগামীকাল, অর্থাৎ সোমবার মস্কোর উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ জয়ের আনন্দে প্রতিবছর ২৪ জুন ‘ভিক্টরি ডে প্যারেড’ হয় সেখানে। ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতেই যাচ্ছেন রাজনাথ। তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেখানে আমন্ত্রিত হিসেবে উপস্থিত থাকবেন চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীও।
সেনা সূত্রে খবর, মস্কোর রেড স্কোয়ারে অনুষ্ঠিত হতে চলা ‘ভিক্টরি ডে প্যারেড’-এ একজন কর্নেল পদমর্যাদার অফিসারের নেতৃত্বে অংশগ্রহণ করবে ভারতের তিন বাহিনীর একটি যৌথ দল। এছাড়া, রেড স্কোয়ারে একজন মেজরের নেতৃত্বে প্যারেডে অংশ নেবেন শিখ লাইট ইনফ্যান্টরি রেজিমেন্টের জওয়ানরা। উল্লেখ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ‘ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মি’র হয়ে নাৎসি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছে শিখ লাইট ইনফ্যান্টরি রেজিমেন্ট। যুদ্ধক্ষেত্রে সাহসিকতার জন্য বহু পুরস্কারও রয়েছে এই রেজিমেন্টের ঝুলিতে। সব মিলিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রাণ দিয়েছিলেন প্রায় ৮৭ হাজার ভারতীয় সৈনিক।
জুনের ১৭ তারিখ মস্কোয় দেওয়া এক বিবৃতিতে রুশ বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মারিয়া ঝাখারোভা জানিয়েছিলেন, রুশ সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ভারত ও চীনের সৈন্য দলও রেড স্কোয়ারে মার্চ করবে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, মস্কোয় ভারত ও চীন দু’দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন। লাদাখ নিয়ে রক্তাক্ত সংঘর্ষের আবহে রাশিয়া পৌরহিত্যে মস্কোয় পর্দার আড়ালে দু’জনের বৈঠক হবে কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।
বিশ্লেষকদের মতে, এশিয়া মহাদেশে মার্কিন প্রভাব রুখতে চীনের সঙ্গে মরিয়া রাশিয়াও। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু থেকে শুরু করে ইন্দিরা গান্ধী পর্যন্ত মস্কোর সঙ্গে অত্যন্ত মজবুত সম্পর্কের ভিত স্থাপন করে গিয়েছেন। যার সবথেকে বড় উদাহরণ ১৯৭১- এর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে রাশিয়ার ভূমিকা। সেবারে মার্কিন নৌবহর রুখে দিয়েছে সোভিয়েত নৌবাহিনী। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সমীকরণ পাল্টেছে। মোদী জমানায় কিছুটা জমি হারিয়েছে ক্রেমলিন। সেই জায়গায় ওয়াশিংটনের সঙ্গে দহরম মহরম বেড়েছে নয়াদিল্লীর। তাই ভারত ও চীনের মধ্যে আপোস করিয়ে ফের ফের সেই জায়গা উদ্ধার করার চেষ্টা অবশ্যই চালাবেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।