গত অর্থবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির হার ১১ বছরের নীচে তলিয়ে যাওয়ার হিসেব সামনে আসার দিন তিনেকের মধ্যেই ভারতের রেটিং এক ধাপ ছেঁটে দিল আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থা মুডি’জ়। তা ‘বিএএ২’ থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ‘বিএএ৩’। দীর্ঘ দু’দশক পরে এই প্রথম ভারতকে ধার দেওয়ার ঝুঁকি বেড়েছে বলে জানাল মুডিজ।
বিদেশি মু্দ্রায় এবং ভারতীয় মুদ্রায় ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি এবং স্বল্পমেয়াদি সরকারি বন্ডের রেটিং কমিয়েছে মুডি’জ়। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যায়ন কমল ভারতের। দীর্ঘমেয়াদে যে বন্ড ছেড়ে সরকার ধার নেয়, তার রেটিং ‘বিএএ২’ থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ‘বিএএ৩’। অন্য দিকে ভারতীয় মুদ্রায় স্বল্পমেয়াদি বন্ডের ক্ষেত্রে ‘পি-২’ থেকে কমে হয়েছে ‘পি-৩’। বন্ডে লগ্নির ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন রেটিং ‘বিএএ৩’। ফলে এ দেশের বন্ডে লগ্নি না-করার সুপারিশ ‘জাঙ্ক’ থেকে এখন এক ধাপ উপরে ভারত। রেটিং কমিয়ে মুডি’জ়ের বার্তা, ভারতীয় অর্থনীতির যা অবস্থা, তাতে দীর্ঘমেয়াদে নীতি কার্যকর করার ক্ষেত্রে বিপুল চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। যা সামাল দেওয়া মুশকিল হতে পারে।
করোনার আবহে রেটিং ছাঁটার পদক্ষেপ করা হলেও, তার কারণ যে অর্থনীতিতে করোনার ধাক্কা নয়, তা-ও স্পষ্ট জানিয়েছে মূল্যায়ন সংস্থাটি। তাদের দাবি, ঝিমুনি ছিল দীর্ঘ দিন ধরেই। আর্থিক বৃদ্ধির হার কমছে নাগাড়ে। সমস্যা চেপে ক্রমশ চেপে বসেছে আর্থিক ক্ষেত্রে। রাজকোষ ঘাটতি মাথা তুলেছে ইতিমধ্যেই। ফলে এ দেশকে ধার দেওয়ার ঝুঁকি বেড়েছে অনেক আগেই। করোনা শুধু সেই ঝুঁকিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
এমনকি মুডি’জ়ের এটাও দাবি যে, এখন যতটা আশঙ্কা করা হচ্ছে, আর্থিক ক্ষেত্রের সমস্যাগুলির জেরে ভারতের অর্থনৈতিক শক্তি আগামী দিনে তার থেকেও অনেক বেশি ক্ষয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে যেহেতু আর্থিক ক্ষেত্রের সমস্যা সংক্রান্ত ঝুঁকিগুলি কমানোর জন্য ভারতের নীতি নির্ধারক প্রতিষ্ঠানের নেওয়া নীতিগুলি কার্যকর করাই কঠিন হতে পারে।