করোনার জেরে স্তব্ধ গোটা বিশ্ব। করোনা পরবর্তীতে হাজার এক পরিবর্তন সামনে আসছে, আগামী দিনেও আসবে। কিন্তু ক্রিকেট দুনিয়ায় বদলে যেতে পারে রিভার্স সুইং। রিভার্স সুইংয়ের জনক সরফরাজ নওয়াজ শঙ্কিত হয়ে পড়ছেন করোনা পরবর্তী সময়ে ফাস্ট বোলারদের কথা ভেবে।
পাক পেস-কিংবদন্তি জানাচ্ছেন, ‘‘করোনাভাইরাসের জেরে বলের পালিশ করা নিয়ে যে রকম কঠিন সব নিষেধাজ্ঞা আসতে চলেছে, তাতে রিভার্স সুইং শিল্পটাই না বিলুপ্ত হয়ে যায়! বলে যদি থুতু বা লালা দিয়ে পালিশ না-করা যায়, তা হলে রিভার্স সুইং হবেই বা কী করে!’’
রিভার্স বন্ধ হয়ে গেলে ফাস্ট বোলারদের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়বে। লকডাউনের পর ক্রিকেট ফিরলে আইসিসি-র উচিত, ঘাসের উইকেট তৈরি করা। না হলে আরওই ব্যাটসম্যানদের পক্ষে চলে যাবে ক্রিকেট। আর তাছাড়া স্পিনারদের ভূমিকা ফের বেড়ে যাবে ক্রিকেটে। বল যদি রক্ষণাবেক্ষণ না-করা যায়, রিভার্স হবে না। পেসারদের কাজ হবে না তখন ভরসা হবে স্পিনাররাই। এমনটাই মনে করেন সরফরাজ।
মোমের মলম বানিয়ে কৃত্রিম পদার্থ দিয়ে বলের পালিশ রক্ষা করার কথা উঠলে সরফরাজ জানান, ‘‘ঘাম, থুতু, লালা— এ সব দিয়েই তো বলের পালিশ রেখে এসেছে বোলাররা। তাতে পুরনো বলে রিভার্স সুইং হয়েছে। কৃত্রিম পদার্থ দিয়ে একই কাজ হবে? আমি কিন্তু নিশ্চিত নই।’’
ভারতীয় পেসারদের মধ্যে যশপ্রীত বুমরাহ, মহম্মদ শামি, ভুবনেশ্বর কুমারকে পছন্দ তাঁর। বললেন, ‘‘করোনার জেরে যে সব নিষেধাজ্ঞা আনার কথা হচ্ছে, তাতে বুমরাহর উপরে কোনও প্রভাব পড়বে না। ওর বোলিংয়ের ধরনটা সম্পূর্ণ অন্য রকম। পালিশ-নির্ভর সুইং বোলিং নয়, ওর অস্ত্র পিচ্ছিল গতি এবং কোণ তৈরি করা।’’
প্রসঙ্গত, লাহৌরের নেটে অনুশীলনের সময়ে সরফরাজ়ের রিভার্স সুইং আবিষ্কারের চমকপ্রদ কাহিনি ক্রিকেট রূপকথায় স্থান করে নিয়েছে। তাঁর অভ্যাস ছিল নানা ধরনের পুরনো বল দিয়ে বল করা। এক দিন খুব পুরনো একটা বলকে পালিশ করে চকচকে করে তোলেন তিনি। তার পরে সেটা দিয়ে বল করতে গিয়ে দেখেন, যে দিকে সুইং করার কথা, তার উল্টো দিকে বাঁক নিচ্ছে বল। রিভার্স সুইংয়ের সেই ছিল ‘ইউরেকা’ মুহূর্ত।