প্রথমে পথে, তারপর রেল লাইনে, এবার ট্রেনের মধ্যে। পরিযায়ী শ্রমিক ও তাদের পরিবারের মৃত্যু মিছিল অব্যাহত রয়েছে দেশ জুড়ে। বুধবার রেল সূত্রে জানানো হয়েছে বিগত কয়েকদিনে ট্রেনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে সাত পরিযায়ী শ্রমিকের। তার মধ্যে চারজন বিহারের এবং তিনজন উত্তর প্রদেশের।
শ্রমিক স্পেশালের অব্যবস্থা, জল ও খাবারের অভাব, প্রচণ্ড দেরি হওয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই বহু অভিযোগ উঠেছে। যদিও রেল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য পূর্ব নির্ধারিত সময়ে সঠিক রুটেই ট্রেন চলাচল করছে। যদিও ভুক্তভোগীরা জানাচ্ছেন যেখানে গন্তব্যে পৌঁছতে সময় লাগে ২৪ ঘণ্টা সেখানে এক একটি শ্রমিক স্পেশাল পৌঁছতে সময় নিচ্ছে দু’দিন।
৩৫ বছরের উরেশ খাতুনের মৃত্যু সারা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে। বিহারের মজফফরপুর রেল স্টেশনে তার শিশু সন্তান মায়ের মৃতদেহকে ঠেলে জাগানোর চেষ্টা করছে এই দৃশ্যে সারা দেশের মানুষ মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। এই মর্মান্তিক ভিডিওটি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর দেশজুড়ে রেলমন্ত্রকের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় ওঠে। রেল দফতর অবশ্য জানায় সম্প্রতি হওয়া উরেশ খাতুনের হার্ট সার্জারিই তার মৃত্যুর কারণ।
দ্বিতীয় মৃত্যুটি এক পরিযায়ী শ্রমিকের সাড়ে চার বছরের পুত্র সন্তানের। দিল্লি থেকে বিহারের মুজফফরপুরে ‘শ্রমিক স্পেশাল’ ট্রেনটি এসে পৌঁছলে শিশুটির বাবা পাগলের মতো ছুটোছুটি করতে থাকেন একটু দুধের জন্য, কারণ তার মনে হয়েছিল ওই দুধটুকু পেলে তার সন্তান বেঁচে যাবে। তার সন্তানের মৃত্যুর জন্য প্রবল গরমকে দায়ী করলেও রেল পুলিশের ডিএসপি রমাকান্ত উপাধ্যায় জানান, মুজফফরপুর স্টেশনে ট্রেনটি পৌঁছবার আগেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছিল।
মুম্বাই–দারভাঙ্গা শ্রমিক স্পেশাল বিহারের দানাপুর পৌঁছলে ট্রেনের ভেতর থেকে ৭০ বছরের বশিষ্ট মাহাতো’র মৃতদেহ বের করে নিয়ে আসা হয়। রেল সূত্রে জানানো হয়, মাহাতো হার্টের রোগী ছিলেন এবং মাইহার ও সাতনার মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। সুরাট–হাজিপুর শ্রমিক স্পেশালে মৃত্যু হয় ভূষণ সিং নামক ৫৮ বছরের এক পরিযায়ী শ্রমিকের। তার মৃতদেহ পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে রেল পুলিশ সূত্রে বলা হয়।