এমন লড়াই শুধু পারেন মা-ই। তাই অন্তত একটা জায়গায় পৃথিবীর সব মায়েরা একই রকম। সন্তান স্নেহে তাঁর থেকে বড় আর কেউ নয়। সন্তানকে এই পৃথিবীর আলো দেখানো যতই কঠিন হোক না কেন, যে কোনও পরিস্থিতিতে মা একাই সেই লড়াইয়ে নামেন। মাতৃ দিবসের সংজ্ঞা যে মা জানেন না, তিনিও সন্তানকে আগলে রাখতে কোনও অংশ কম যান না।
যেমন, লকডাউনের মধ্যে বাড়ি ফিরতে মরিয়া এই বাবা-মায়েরা। কিন্তু তারপরেও ঘটে যায় নানারকম অবাঞ্ছিত দুর্ঘটনা। সে ঘটনার দায় না বাবা-মায়ের, না সন্তানের, দায় শুধুমাত্র
পরিস্থিতির। যেখানে পরিস্থিতি প্রতিকূল হয়, সেখানে সাধারণ মানুষের হাত-পা বাঁধা। এমনই ঘটনার আবারও সাক্ষী থাকল দেশবাসী। চেষ্টা করেছিলেন মা। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। ঘরে ফেরার জন্য ১০০ কিমি হেঁটে মাঝরাস্তাতেই মৃত সন্তানের জন্ম দিলেন মা। হরিয়ানার আম্বালার কাছে ঘটনাটি ঘটে। বিহারে নিজেদের বাড়ি ফিরতে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করেছিলেন ওই অন্তঃসত্ত্বা মহিলা। মাঝ রাস্তাতেই তীব্র প্রসব যন্ত্রণা। রাস্তাতেই জন্ম হয় এক কন্যাসন্তানের। কিন্তু জন্মের পরপরই মারা যায় সদ্যোজাত।
বিন্দিয়া আর তাঁর স্বামী যতীন রাম, দু’জনেরই বয়স সবে কুড়ির কোঠায়। গত সপ্তাহে পঞ্জাবের লুধিয়ানা থেকে বিহারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছিলেন তাঁরা। বুধবার এসে পৌঁছন আম্বালায়। দীর্ঘপথ হাঁটার ধকল সহ্য করতে না পেরে প্রসবযন্ত্রণা শুরু হয়ে যায় বিন্দিয়ার। ঘটনাটি পুলিশের নজরে আসতে তাঁরা বিন্দিয়াকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু তাঁরা বাঁচাতে পারেননি তাঁদের সন্তানকে। বুকে পাথর রেখে সন্তানের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন হতভাগ্য বাবা-মা। বিন্দিয়া আর রামের বিয়ে হয়েছিল ২ বছর আগে। এটাই ছিল তাঁদের প্রথম সন্তান। গত বছর বিহার থেকে স্বামীর কাছে লুধিয়ানায় চলে যান বিন্দিয়া। সংসার পাতেন সেখানেই। রাম স্থানীয় একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন। কিন্তু লকডাউনে চলে গিয়েছিল কাজ। তাই ৯ মাসের গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফেরার পথ ধরেন রাম। টাকা ছিল না, তাই ব্যবস্থা হয়নি শষ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনেও। তবে আম্বালায় এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাঁদের ট্রেনের ব্যবস্থা করে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করছে।