তৃতীয় দফার লকডাউন শুরু হতেই রাজ্য সরকার নির্দেশ দিয়েছে, বাংলার কনটেনমেন্ট এলাকাগুলি বাদে বাকি সমস্ত অঞ্চলে রিয়েল এস্টেট নির্মাণ শুরু করা যাবে। কিন্তু, স্থানীয় প্রশাসনের থেকে এখনও অবধি অনুমোদন না মেলায় নির্মাণ শুরু করা যাচ্ছে না, এমনই অভিযোগ বেশিরভাগ রিয়েল এস্টেট নির্মাতা সংস্থার। এই সমস্যা আরও জটিল হয়েছে শ্রমিক ও কাঁচামাল জোগানের অভাবে। ফলে, গুটি কয়েক প্রকল্প বাদে এখনও পর্যন্ত থমকে কলকাতা সহ গোটা রাজ্যে নির্মীয়মাণ রিয়েল এস্টেট প্রকল্প।
এই বিষয়ে জৈন গোষ্ঠীর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ঋষি জৈন বলেন, ‘রাজ্যের পরিবহণ দফতর থেকে জেনেছি, মুর্শিদাবাদ বা অন্যান্য জেলা থেকে শ্রমিক আনতে যদি কলকাতা থেকে ফাঁকা বাস পাঠাই, সে ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন শ্রমিক ভর্তি বাস সংশ্লিষ্ট জেলা থেকে বের হওয়ার অনুমতি দেবে না। কলকাতায় প্রবেশের অনুমতিও মিলবে না। ফলে, আমি রাজারহাটে আমাদের প্রকল্পে থেকে যাওয়া ২৮ জন শ্রমিককে নিয়েই আপাতত কাজ চালু করেছি। যেখানে ৪৫০ জন শ্রমিকের রোজ প্রয়োজন, সেখানে ২৮ জন দিয়ে কী ভাবে কাজ হবে কল্পনা করুন।’
তবে এত কিছুর মধ্যেও দুই ২৪ পরগণায় কয়েকটি প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে বা শীঘ্রই আরম্ভ হবে। যেমন, সিদ্ধা গোষ্ঠী তাদের পাঁচটি প্রকল্পের কাজ সোম-মঙ্গলবার নাগাদ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর সঞ্জয় জৈনের কথায়, ‘আমরা কাজ চালু করার জন্য মৌখিক অনুমোদন পেয়েছি। আশা করছি, সোম-মঙ্গলবার নাগাদ লিখিত অনুমোদনও পেয়ে যাব। তার পরেই প্রকল্প এলাকায় যতজন শ্রমিক রয়েছেন, তাঁদের দিয়েই ঢিমেতালে কাজ চালু করে দেব।’
ইডেন রিয়েলটি-র একটি নির্মীয়মাণ প্রকল্প রেড জোনের বাইরে রয়েছে। কিন্তু, সেখানেও তারা কাজ শুরু করতে পারছে না। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর আর্য সুমন্তের ব্যাখ্যা, ‘আমাদের শ্রীরামপুরের প্রকল্পের চারপাশে কন্টেনমেন্ট জোন। পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে শ্রমিক নিয়ে আসব কী ভাবে? তার উপর আমাদের বেশির ভাগ শ্রমিকই মুর্শিদাবাদের। ফলে, বাস, ট্রেন চালু না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকরা আসতে না পারায় এখনই নির্মাণকাজ পুরোদমে শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।’
অর্থাৎ, সরকারি নির্দেশ জারি হলেও দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কোনও লক্ষণ আপাতত নেই। সম্পত্তি উপদেষ্টা সংস্থা জেএলএল ইন্ডিয়ার এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর তথা মুখ্য অর্থনীতিবিদ সামন্তক দাস এদিন বলেন, ‘নির্মাণকাজ শুরু করার জন্য স্থানীয় পুর ও পুলিশ প্রশাসনের থেকেও একাধিক ছাড়পত্র পাওয়া জরুরি এবং এই গোটা প্রক্রিয়াটাই অত্যন্ত জটিল ও সময়সাপেক্ষ। ফলে, আমার মনে হয় সেপ্টেম্বরের আগে নির্মাণকাজ পুরোপুরি শুরু হবে না।’