করোনা ভাইরাসের জেরে জোর ধাক্কা খেয়েছে বিশ্বের অর্থনীতি। রেহাই পায়নি ফুটবল জগতও। ইতিমধ্যেই বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলি আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে এসেছেন ফুটবলাররা। কী হবে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় খেলার ভবিষ্যৎ? আশা-আশঙ্কার দোলাচলে বিশেষজ্ঞমহল।
ইদানীং ফুটবলার কেনার জন্য লাগাম ছাড়া অর্থ খরচ হত বিশ্ব ফুটবলে। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, নেইমার এবং আরও কয়েকজনের চুক্তির দিকে তাকালেই ব্যাপারটি পরিষ্কার হবে। কিন্তু আসন্ন দলবদলের বাজারে ফুটবলাররাও চাহিদা কমাতে বাধ্য হবেন। পাশাপাশি ক্লাব কর্তারাও চাইবেন, অতিরিক্ত ব্যয় না করতে। বায়ার্ন মিউনিখের সভাপতি উলি হোয়েনেস যা স্বীকার করে বলেছেন,‘আগামী দুই-তিন বছরের জন্য আমরা সেভাবে অর্থ ব্যয় করতে পারব না। অতীতে কী হয়েছে তা ভুলে যেতে হবে। করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার ছোঁয়া। ব্যতিক্রম নই আমরাও।’
বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে ফুটবল বন্ধ থাকেনি। তবে এবার এই করোনা ভাইরাসের জেরে যেভাবে খেলা বন্ধ হয়েছে, তাতে গোটা প্রক্রিয়াতে বদল আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি যে বিপুল অর্থ এতদিন জলের মতো খরচ করা হত, তাতেও লাগাম আসবে। এই প্রসঙ্গে এভার্টন কোচ কার্লো আনসেলোত্তি বলেন, ‘আমরা এমন একটা পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, যার কথা কখনও কেউ ভাবতে পারেনি। এর ফলে অনেক কিছু নতুন করে দেখার সুযোগ মিলবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘টিভি স্বত্ব থেকে যে আয় হতো, তা কমবে। স্বাভাবিকভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন কোচ ও ফুটবলাররা। তবে টিকিটের দাম কমলে জনপ্রিয়তায় ঘাটতি হবে না বলেই মনে হয়।’
আনসেলোত্তির পাশাপাশি ফুটবল ঐতিহাসিক ডেভিড গোল্ডব্লাট জানান, ‘সঙ্কট সবসময় নতুন সুযোগের পথ খুলে দেয়। করোনার জন্য আগামীতে বিরাট পরিবর্তন আসতে বাধ্য। আমার ধারণা, ফুটবল আধিপত্যে এবার বদল হবে। মুষ্টিমেয় শ্রেণির দাপট আর থাকবে না।’
এই বিপজ্জনক ভাইরাসের প্রভাবে ভবিষ্যতে টুর্নামেন্ট আয়োজনের ক্ষেত্রে কাটছাঁট হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। ২০২৬ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা কমার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে এখনই এই বিষয়ে মন্তব্য করতে নারাজ বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা ফিফা। ফিফপ্রোর সাধারণ সচিব জোনাস বিয়ার-হফম্যান বলেছেন, ‘সবকিছু নতুন করে সাজানোর জন্য এটা সঠিক সময় নয়। সবার আগে এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’