করোনা মোকাবিলায় গোটা বিশ্বজুড়ে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলিতে কোথাও লকডাউন চলছে, কোথাও চলছে শাটডাউন। রাস্তায় যানবাহন নেই, কল-কারখানা চলছে না। ফলে চাহিদা কমছে জ্বালানি তেলের। আর চাহিদা কমার সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে কমছে দাম। বিশ্ববাজারে একসময় যে তেলের দাম ১০০ ডলারের উপরে ছিল, এখন ১৫ ডলারে নেমে এসেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব-সহ রপ্তানিকারক দেশগুলিতে বিক্রি না থাকায় মজুত বেড়েছে। সোমবার আন্তর্জাতিক বাজারে ফের দাম কমেছে অপরিশোধিত তেলের।
আমেরিকায় অপরিশোধিত তেলের দাম ১.৪৯ ডলার বা ৮.৮ শতাংশ কমে প্রতি ব্যারেল দাঁড়ায় ১৫.৪৫ ডলারে। লন্ডনের ব্রেন্ট তেলের দাম ৪৪ সেন্ট বা ২.১ শতাংশ কমে প্রতি ব্যারেল হয়েছে ২১ ডলার। এছাড়া গত ৯ সপ্তাহের মধ্যে আট সপ্তাহেই আমেরিকায় অপরিশোধিত তেলের দাম ৭ শতাংশ এবং ব্রেন্ট তেলের দাম ২৪ শতাংশ কমেছে।
এদিকে গত সপ্তাহে আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম অপরিশোধিত তেলের দাম শূন্য ডলারের নিচে নেমে যায়। বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৩ সালে জ্বালানি তেলের দাম ১১০ ডলার ছিল। কিন্তু পরে অর্থনৈতিক মন্দার জেরে দাম কিছুটা কমেছিল। কিন্তু করোনার কারণে বিশ্বজুড়ে শিল্প-কারখানা সব বন্ধ। লকডাউনের জেরে বন্ধ পরিবহণও। এই চাহিদা কমায় তেলের দাম কমে গিয়েছে। দুই মাসে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের চাহিদা কমেছে ৩০ শতাংশ। সিডনিতে সিএমসি মার্কেটের প্রধান বিশ্লেষক মিখায়েল ম্যাকার্থি বলেন, ‘তেলের দাম কমার কারণ হচ্ছে আমেরিকায় বিপুল মজুত থাকলেও বিশ্ববাজারে চাহিদা কমেছে ব্যাপকভাবে।’
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহের শুরুতেই আমেরিকায় জ্বালানি তেলের সূচক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টামিডিয়েট (ডব্লুটিআই)-এর দাম অর্থাৎ তেলের দাম শূন্য ডলারের নিচে চলে যায়। ১৯৮৩-র পর যা সর্বনিম্ন। এর আগে ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট অপরিশোধিত তেলের ব্যারেল প্রতি দাম ৪৫ শতাংশ কমে ১০.০১ ডলার হয়। যা ১৯৮৬ সালের পর সর্বনিম্নই শুধু নয়, ১৯৮২ সালের পর তেলের দামে একদিনে এতটা পতন হয়নি। আবার, কয়েকদিন আগে এশিয়ার বাজারে ডাব্লিউটিআই অপরিশোধিত জ্বালানী তেল ব্যারেল প্রতি বিক্রি হয়েছে ১৪ শতাংশ কমে ১৫.৬৫ ডলারে। ১৯৯৯ সালের পর তেলের দর এত নিচে আর নামেনি।