যতদিন না কোভিড ভ্যাকসিন ও কার্যকরী ড্রাগ বাজারে আসছে, বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করা যেতে পারে, এমনই নিদান দিয়েছিল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। সেই মতই করোনা সংক্রমণের চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপির প্রয়োগ হবে বলে জানিয়েছিলেন দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। পরীক্ষামূলক ভাবে মঙ্গলবার দিল্লীতে দুই করোনা রোগীর চিকিৎসায় এই থেরাপি ব্যবহার করা হয়। এবং তাতে ভাল ফলও মিলেছে। আর হাসপাতালের তরফে সেই রিপোর্ট পাওয়ার পরে আজই প্লাজমা থেরাপি নিয়ে জরুরি ঘোষণা করতে পারেন কেজরিওয়াল।
প্রসঙ্গত, দিল্লীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ৪৯ বছরের এক রোগীর শরীরে এই প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করা হয়েছে। আরও একজনের ওপর ট্রায়াল করা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, এখনও অবধি রোগীদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। সংক্রমণ কমার সম্ভাবনা রয়েছে। উল্লেখ্য, আইসিএমআর আগেই জানিয়েছিল, যতদিন না কোভিড ভ্যাকসিন ও কার্যকরী ড্রাগ বাজারে আসছে, বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করা যেতেই পারে। এক্ষেত্রে প্লাজমা-থেরাপি এবং প্লাজমা এক্সচেঞ্জ থেরাপি, দু’রকম পদ্ধতির ব্যবহার হতে পারে বলে জানিয়েছিল তারা।
এই মুহূর্তে পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির(এনআইভি) সহযোগিতায় প্লাজমা থেরাপি নিয়ে গবেষণা চলছে আইসিএমআরে। জানানো হয়েছে, এই থেরাপি কিছুদিনের ড্রাগ কন্ট্রোলের অনুমোদন চলে আসবে। এর পরেই মানুষের ওপর ট্রায়ালের জন্য রেজিস্ট্রি করা হবে। তবে ইতিমধ্যেই কেরালা ও গুজরাতের কয়েকটি হাসপাতালে এই থেরাপি শুরু করে দিয়েছেন ডাক্তাররা। কেরালা সরকারের উদ্যোগে কয়েকটি হাসপাতালে ডাক্তার ও বিজ্ঞানীদের নিয়ে তৈরি হযেছে টাস্ক ফোর্স। প্লাজমা থেরাপির প্রয়োগ কীভাবে হবে সেই নিয়ে প্রোটোকল বানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্লাজমা থেরাপি হল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের শরীরের প্লাজমা বা রক্তরস নিয়ে করোনা আক্রান্তদের শরীরে তা প্রতিস্থাপন করা। তাহলে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির অ্যান্টিবডি আক্রান্তের শরীরে গিয়ে কোভিড ১৯ ভাইরাসকে হারিয়ে তাঁকে সুস্থ করে তুলতে পারবে বলেই বিজ্ঞানীদের ধারণা। যদিও এখনও এই টেস্ট করে দেখা হয়নি। সাধারণত, সুস্থ হওয়ার পর ১৪ দিন ধরে যদি কোনও ব্যক্তির রিপোর্ট নেগেটিভ আসে, তখন তাঁকে পুরোপুরি সুস্থ বলা যায়। এরকম হলে তবেই তাঁর প্লাজমা এই থেরাপির জন্য নেওয়া হবে।