লকডাউন ভাঙা যাবে না। অথচ সাধারণ মানুষকে দীর্ঘদিনের ভোগান্তি থেকেও বের করে আনতে হবে। তারই পথ খুঁজতে বণিকসভা ও শিল্পপতিদের নিয়ে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। ভিড় না করে জরুরি পরিষেবা চালু রাখার জন্য কর্পোরেট সংস্থাকে দায়িত্ব নেওয়ার অনুরোধ জানালেন তিনি। সবধরনের হোম ডেলিভারিতে ছাড় দেওয়া এবং অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বহনের জন্য ট্যাক্সি ব্যবহারের কথা বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চা বাগান খোলায় সায় দিলেন। তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতেই হবে বলে কড়া হুঁশিয়ারি তাঁর।
ইঙ্গিত আগে মিলেছিল, ১৫ এপ্রিলের পর লকডাউনের সময়সীমা বাড়বে। শনিবার এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। তবে তার আগে প্রায় প্রতিটি রাজ্যই দীর্ঘ লকডাউনের প্রস্তুতি সেরে রাখছে। বাংলাও তার ব্যতিক্রম নয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে বণিকসভা ও শিল্পপতিদের নিয়ে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকই তার ইঙ্গিত। করোনা মোকাবিলায় পর্যাপ্ত মাস্ক এবং পিপিই’র প্রয়োজনীয় সামগ্রী তৈরির কাজে এখানকার তন্তুজ, বঙ্গশ্রীকে কাজে লাগানো হয়েছিল। পিপিই তৈরির দায়িত্ব ছিল উলুবেড়িয়ার একটি সংস্থার উপর। এবার সেসব কাজে আরও গতি আনতে এবং চাহিদা পূরণ করতে ক্ষুদ্রশিল্পকতে আরও বেশি করে কাজে লাগাতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তাই মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছা, বাড়িতে বসে কাজ বাড়ানো হোক। এছাড়া ন্যূনতম কর্মীদের নিয়ে, রোটেশন পদ্ধতিতে চালু হতে পারে কাজ। এই ক্ষুদ্র শিল্পগুলিকে স্যানিটাইজার তৈরির বরাত দিতে চান তিনি।
এই একই পদ্ধতিতে চা বাগানের কাজও চালু করতে চান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর পরামর্শ, দূরত্ব বজায় রেখে অন্তত ৫০ শতাংশ শ্রমিক নিয়ে চা পাতা তোলার কাজ শুরু হোক। নাহলে বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। তবে সেখানে স্যানিটাইজিং মাস্ট। তাঁর এই ঘোষণার পর রাইস মিল চালু করার আবেদন জানান চালকল মালিকরা। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, রাজ্যে পর্যাপ্ত হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন রয়েছে। তবে যা আছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় সঠিক কি না, তা নিয়ে সংশয় হওয়ায় এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরামর্শ দেন যে বেঙ্গল কেমিক্যালসের পরিকাঠামো ব্যবহার করে ওষুধ তৈরির উদ্যোগ নিতে। এদিন রাজ্যের করোনা পরিস্থিতির বিস্তারিত তথ্য দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, গত ২৪ ঘণ্টা বারোজন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন, যার জেরে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৮৩। তিনজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। মৃ্ত্যু হয়েছে ৫ জনের। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, রাজ্যে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার এই মুহূর্তে ৫৬২টি। সেই সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।