করোনা প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে ২ সপ্তাহ আগে একটি রবিবার জনতা কার্ফু পালন করেছিল গোটা ভারত। যার ফলে সেই রবিবার মোটামুটি ফোনেই চোখ ছিল সকলের। ফেসবুকের নিউজফিড স্ক্রল করতে করতেই দেখা যায় একটি ভিডিও। না, জনতা কার্ফু উপেক্ষা করেই চায়ের দোকানে জটলা কিছু ব্যক্তির। পরে এক যুবতীর সঙ্গে সেই নিয়ে কিছু বাক্য বিনিময়। রীতিমত ভাইরাল হয়ে যায় দুটি সংলাপ। এক যুবকের ‘ চা খেতে এসেছিলাম, আড্ডা মারতে নয়। খাওয়া হয়ে গিয়েছে এবার চলে যাব।’
আর অপরটি ছিল এক প্রৌঢ়ের ছোট্ট জিজ্ঞাসা, ‘আমরা চা খাবো না? চা খাবো না আমরা?’ ব্যাস, রীতিমতো ভাইরাল সেই ভিডিও আর সেই সঙ্গে হাজার মিম। কিন্তু যাকে নিয়ে মিম সেই ব্যক্তি মৃদুল দেব কিন্তু এই ভার্চুয়াল হাসির জগৎ থেকে অনেক দূরে। আর তাঁর জীবনটাও খুব একটা হাসি ঠাট্টায় ভরা নয়।
সম্প্রতি জানা যায় মৃদুলবাবুর আসল কাহিনী, সেই ফেসবুকের দৌলতেই। তাঁর পরিচিত একজনই জানান, মৃদুল আসলে এক দিনমজুর। নুন আনতে পান্তা ফুড়ানোর জোগাড় তাঁর পরিবারে। দেশব্যাপী লক ডাউনের ফলে অবস্থা আরও সঙ্গীন। নেই কাজ, নেই অর্থও। তবুও মৃদুলবাবু কিন্তু নির্বিকার। যতবার কেউ তাঁকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর পরিচিত কেউ সাহায্য চেয়ে ভিডিও পোস্ট করেছেন, ততবার চুপ করে মিষ্টি হাসি উপহার দিয়ে গিয়েছেন।
তবে ঘটনাক্রমে মৃদুলবাবুর দুর্দশা কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া মারফত জানতে পেরেছেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক তথা বর্তমান বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। আর এহেন খবর জানতে পেরেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বাংলার মহারাজ। দাদার পরিচিত এক ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই কথা জানিয়েছেন। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ফাউন্ডেশন ইতিমধ্যেই মৃদুলবাবুর হাতে তুলে দিয়েছেন কয়েক কেজি চাল, ডাল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য। এমনকি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাঁর কাজের বন্দোবস্তও করা হবে বলে জানা গিয়েছে।