করোনা সংক্রমণের ভয় প্রত্যেকের মনেই পুরোদস্তুর রয়েছে। কিন্তু তা বলে কি মানুষের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা যায়? এদিন উত্তরপ্রদেশের একটি ভাইরাল হওয়া ভিডিও সেই প্রশ্নই মানুষের মনে তুলে দিল। ভিনরাজ্য থেকে বাড়ি ফিরে আসার ‘অপরাধে’ শ্রমিকদের সঙ্গে যে আচরণ করা হল, তা সমালোচিত হয়েছে সব মহলে। শুধু জোয়ান বা পুরুষ মানুষ নয়, মহিলা ও শিশুদেরও ন্যক্কারজনক পদ্ধতিতে ‘জীবাণুমুক্ত’ করল যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসন।
বাইরের রাজ্য থেকে যেসব পরিযায়ী শ্রমিকরা নিজ রাজ্যে ফিরেছেন, তাঁদের জন্য ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন ইতিমধ্যেই বাধ্যতামূলক করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে এদিন উত্তরপ্রদেশের বরেলিতে দেখা গেল, একদল শ্রমিককে রাস্তায় বসিয়ে তাঁদের রাসায়নিক দিয়ে রীতিমতো স্নান করানো হল। যদি কেউ নিজের শরীরে করোনার জীবাণু বহন করে আনেন তবে এর ফলে সেই জীবাণু নষ্ট হয়ে যাবে বলে মনে করছেন আধিকারিকরা।
উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনউ থেকে ২৭০ কিলোমিটার দূরের এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই নড়ে গিয়েছে গোটা ভারত। ভিডিওটি ভাইরাল রয়েছে দাবানলের গতিতে। সবচেয়ে অবাক করা বিষয়, খোদ পুলিশের সামনেই পুরো ঘটনাটা ঘটেছে। আর তাঁরা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিওটিতে শ্রমিকদের উদ্দেশে এক আধিকারিককে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘নিজেদের চোখ বন্ধ করে নাও। বাচ্চাদের চোখও বন্ধ করে দাও।’
ঠিক যেদিন পরিযায়ী শ্রমিকদের দুরাবস্থা নিয়ে করোনা আতঙ্কের মধ্যেও সুপ্রিম কোর্টে জরুরি ভিত্তিতে শুনানি চলছে, সেদিন এই ধরনের ঘটনা উত্তরপ্রদেশ সরকারের মানবিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। সমালোচনার ঝড় উঠতেই এক আধিকারিক সাফাই দিয়ে বলেন, ‘কোনও রাসায়নিক আমরা স্প্রে করিনি, শ্রমিকদের উপর ক্লোরিন ও জলের মিশ্রণ ছড়ানো হয়েছিল। আমরা কোনওভাবেই অমানবিক হতে চাই না। তবে যেহেতু ওরা অনেকে মিলে ভিড়ের মধ্যে থেকে ফিরেছিল, তাই ওদের জীবাণুমুক্ত করা অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল। সেই কারণে আমাদের যেটা উচিত মনে হয়েছে আমরা সেটাই করেছি।’