করোনা মোকাবিলায় দেশের অধিকাংশ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত এলাকায় আগেই লকডাউনের কথা ঘোষণা হয়েছিল। তবে তার মধ্যেই মঙ্গলবার রাত ৮টায় ফের জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে এসে গোটা দেশজুড়েই টানা টানা ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই মতোই মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে গোটা দেশে জারি লকডাউন। সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ। বন্ধ দোকান, বাজার, কলকারখানা। আর এর ফলে সব থেকে ক্ষতি হচ্ছে দিনমজুর এবং দরিদ্রদের। দুবছরের ছেলেকে কাঁধে নিয়ে গত দুদিন ধরে প্রায় অনাহারে হেঁটেই উত্তর প্রদেশে নিজেদের গ্রামের উদ্দেশ্যে ফিরছেন বান্টি নামে এক দিনমজুর, তাঁর স্ত্রী এবং পরিবারের অন্যরা।
শুধু বান্টিই নয়, লকডাউনে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন সারা দেশের দিনমজুর, ভাগচাষি, চা শ্রমিকদের মতো মানুষরা যাঁদের রোজগার প্রতিদিনের পারিশ্রমিকের উপরই নির্ভরশীল। সব কিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে কাজ হারিয়েছেন এই সব মানুষরা। কবে এই সমস্যা মিটবে সেই দিশা দিতে পারছে না সরকার। আর এই সব দরিদ্রদের পক্ষে টানা ২১ দিনের খাবার, ওষুধ মজুত করার সামর্থ্যও নেই। বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, কেন্দ্রের অনেক আগেই উচিত ছিল দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে প্রথম থেকেই কড়া পদক্ষেপ নেওয়া।
কারণ ইওরোপ বা চীনের মতো অর্থনৈতিকভাবে উন্নত দেশগুলোর তুলনায় ভারতে যেহেতু গরিব মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি, সেহেতু তাঁদের বিষয়ে সবার আগে প্রাধান্য দেওয়া উচিত ছিল কেন্দ্রের। যা কার্যত এড়িয়ে গিয়েছে মোদী সরকার। তাই এই মুহূর্তে যাঁদের খাবার সংগ্রহ করার সামর্থ্য নেই, তাঁদের হাতেই খাবার তুলে দেওয়া জরুরি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। কারণ যাঁদের প্রতিদিনের উপার্জনে সংসার চলে, তাঁদের রোজগারও হবে না। সুতরাং এই মুহূর্তে তাঁদের হাতে খাবার তুলে দেওয়ার কোনও রাস্তা কেন্দ্রীয় সরকারকে খুঁজে বের করতেই হবে।