ঠিক যেমনটা আশঙ্কা করা হচ্ছিল, হলও তাই। দেশজোড়া লকডাউন জারির ২৪ ঘন্টাও কাটল না, এরমধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়ে গেল কালোবাজারি। সাধারণত, বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করার ফলে যখন চাহিদা বেড়ে যায়, তখন তার সুযোগ নিতে থাকে বিভিন্ন অসাধু ব্যবসায়ী। একেই বলে কালোবাজারি। লকডাউনের পর আলু ও সব্জি দিয়ে প্রথমে শুরু হয়েছিল কালোবাজারি। আলুর পর এবার করোনা আবহে ডিম নিয়ে কালোবাজারির অভিযোগ তুললেন ক্রেতারা। মঙ্গলবার ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা হতেই নদীয়ার তেহট্ট বাজারে এক ধাক্কায় অনেকটাই বাড়ল ডিমের দাম। যে ডিম বিকোয় ৫ টাকা দরে সেটাই নাকি এখন কোথাও বিকোচ্ছে ৭ কোথাও ৮টাকা দরে। কোথাও কোথাও তার আবার দেখাও মিলছে না।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত যেখানে ডিমের দাম ট্রে প্রতি ৯০ টাকা ছিল, বুধবার থেকে সেই ডিমের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০ টাকা ট্রে। আর ডিমের মতোই প্রয়োজনীয় পণ্যের এই ভাবে দাম বাড়ায় সমস্যায় ক্রেতারা। যদিও ডিম বিক্রেতারা মহাজনের ওপর এর দায় চাপিয়েছেন। আবার কিছুদিন আগেও যে মুরগির মাংসের দর খোলাবাজারে নেমে দাঁড়িয়েছিল ৩০-৪০টাকা কেজি, সেটাই এখন রাতারাতি হয়ে গিয়েছে ২৫০ টাকা কেজি। উল্লেখ্য রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার উভয়েই জানিয়েছে, করোনা ঠেকাতে লক ডাউন চললেও নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীর সরবরাহ বজায় রাখা হবে। তার জন্য কোনও রকম বাধা দেওয়া চলবে না। কিন্তু সেই নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে মাংস ও ডিমও পড়ে। তার পরিবহনে কোনও বিধিনিষেধও নেই। অথচ তারই নাকি এখন অগ্নিমূল্য।
এই পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের এ হেন কালোবাজারি ঠেকাতে বাজারে পুলিশি টহল জারি আছে সব জায়গায়। আসানসোল দক্ষিণ থানার মহিশীলা এলাকায় বুধবার সকালে সবজি ও কাঁচা মালের দাম বেশি করে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে দোকানদারদের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে দক্ষিণ থানার পুলিশ এসে টহল দেয় ওই বাজারে। তারপর থেকেই জিনিসপত্রের দাম স্বাভাবিক হয় বলে জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। রাজ্যে যাতে রেশনের পণ্য সরবরাহ করতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য ইতিমধ্যেই বিশেষ নির্দেশ জারি করেছে রাজ্য খাদ্য দফতর। খাদ্যসামগ্রী বহনকারী লরিতে বিশেষ স্টিকার লাগানোর যে ব্যবস্থা করা হয়েছে তা সবাইকে ব্যবহার করতে রেশন ডিলারের সর্বভারতীয় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু অনুরোধ জানিয়েছেন।