করোনার জেরে বন্ধ হতে পারে বাজার-হাট। তাই এই বেলাই সেরে ফেলতে হবে সবকিছু। এমনটা মনে করে প্রায় সারা মাসের বাজার করতে দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন আমজনতা। ফলে গত ২ দিনের মধ্যেই ভাঁটা পড়েছে কাঁচা সবজি থেকে মুদি দোকানের ভাঁড়ারে। আর তার সুযোগে কালোবাজারি শুরু করে অধিক দামে জিনিস বিক্রি করতে শুরু করেছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা। তাই দাম নিয়ন্ত্রণে কয়েকটি বাজার অভিযান চালাচ্ছে ইবি, টাস্ক ফোর্স ও পুলিশ।
সবে মাত্র রাজ্যে তিনজনের মধ্যে দেখা দিয়েছে করোনার প্রভাব, এতেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে ষোলো আনা। কেউ আবার গুজব রটাচ্ছেন বন্ধ হয়ে যেতে পারে দোকান-পাট। তাই কয়েকদিনের মধ্যেই কাঁচা সবজির দাম ছুঁয়েছে আকাশ। একদিকে মুদি দোকানে চাহিদার তুলনায় ভাঁড়ার শূন্য হচ্ছে অন্যদিকে সবজির দাম সীমাহীন হওয়ায় সাঁড়াশি চাপে পড়েছে মধ্যবিত্ত। মরশুমি সবজি কিনতে গিয়ে চোখ কপালে উঠছে সকলের। কোনও দোকানে একরাতের মধ্যেই দাম বেড়ে যাচ্ছে চাল-ডালের। এমত অবস্থায় কী করবে মানুষ? পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাই পথে নামছে ইবি ও পুলিশ আধিকারিকরা। বিভিন্ন বাজারে ঘুরে কোথাও ছদ্মবেশে কোথাও বা পরিচয় দিয়েই জেনে নেওয়া হচ্ছে সবজির দাম কোথাও বা জানার চেষ্টা চলছে বাজারের হঠাৎ এই অগ্নিমূল্যের রহস্য।
শনিবার কোলে মার্কেটে হানা দিয়ে ইবির আধিকারিকরা পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করেন। বেঁধে দেওয়া হয় বেশ কিছু সবজির দাম। শনিবার ডায়মন্ড হারবারে কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালান পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা। ডায়মন্ড হারবারের মহকুমা শাসক সুকান্ত সাহা জানিয়েছেন, ‘ডায়মন্ড হারবারের বাজারগুলিতে আলুর কেজি প্রতি দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছে ১৮ টাকায়। তা সত্বেও আলুর দাম বেশি নেওয়ায় ডায়মন্ডহারবার বাজার থেকে একজন আলু বিক্রেতাকে আটক করা হয়েছে।’ কুলপি ও মন্দিরবাজারের বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালায় সুন্দরবন জেলা পুলিশ। নিত্যপণ্যের দাম বেশি নেওয়ার অভিযোগে ১৬ জনকে আটক করা হয়েছে। শুধুমাত্র দক্ষিণ ২৪ পরগনাই নয়, বালুরঘাট শহরের বড় বাজার, সাহেব কাছারি, পাওয়ার হাউস-সহ বিভিন্ন বাজারে বিশেষ কিছু সামগ্রীর দাম হয়েছে আকাশছোঁয়া। উত্তরের জেলাগুলিতে বাজারে ২৫০-৩০০ টাকার মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা দরে। খাসির মাংস ৭০০ টাকা কিলোয়। জেলার বড় ৩৫টি হাট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে জেলাশাসক নিখিল নির্মল বলেন, ‘আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। বাজার দর দেখতে জেলা স্তরের স্টাস্ক ফোর্সকে নামানো হচ্ছে। তারা বাজারগুলিতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলবেন। জিনিসপত্রের দাম স্বাভাবিক রাখতে বলা হচ্ছে।’