এর আগে নদীয়ার জনসভা থেকে তাঁর করা বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে মুখ খুলেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। ‘যারা সম্পত্তি নষ্ট করছে তাদের কুকুরের মতো গুলি করে মারা উচিত’ – তাঁর এই মন্তব্যের বিরোধিতায় কোনও রাখঢাক না রেখেই বাবুল সরাসরি বলেছিলেন, ‘দিলীপদা দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো কথা বলেছেন।’ এবার ফের প্রকাশ্যে চলে এল বাবুলের সঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কাজিয়া। করোনা রুখতে দেশের বেশীরভাগ বিজেপি নেতার আস্থা এখন গোমূত্র। তাঁদের মতো দিলীপও আস্থা রেখেছেন গোমূত্রে। তবে এবার দিলীপের উল্টো পথে হেঁটে বেশ কড়া সুর শোনা গেল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর গলায়। বাবুল স্পষ্ট জানালেন, ‘সব গেরুয়া বিজেপি নয়’। যার জেরেই ফের অন্তর্দ্বন্দ্ব ধরা পড়ল রাজ্য বিজেপির অলিন্দে।
ঘটনার শুরু একটি টুইটকে ঘিরে। বুধবার করোনা নিয়ে মানুষকে সজাগ করতে এক টুইট করেন বাবুল। যেখানে নিজের গাওয়া একটা বলিউড গানের দুটো লাইন তুলে ধরেন ভিডিওতে। জনপ্রিয় ওই রোম্যান্টিক গানে পরস্পরের কাছাকাছি আসার কথা বলা হলেও আপাতত কারও ও সব করার দরকার নেই, সংক্রমণ এড়াতে দূরত্ব বজায় রাখা দরকার- এমনই বার্তা দিয়ে ১ মিনিট ২৫ সেকেন্ডের ভিডিওটি টুইট করেন বাবুল। আর তারই কমেন্টবক্সে বাবুলকে কটাক্ষ করে এক ব্যক্তি বলেন, ‘গোমূত্র পান করুন বন্ধু ও সুস্থ থাকুন।’ এর পাল্টা দিতে গিয়ে বাবুল বলেন, ‘ওটা আমি করি না। সমর্থনও করি না। ওটা যারা করে তাঁরা ব্যক্তিগত বিশ্বাস থেকে করেন।’ এখানেই শেষ নয়। তিনি আরও বলেন, ‘এ কথা ঠিক যে, কেউ কেউ গেরুয়া পরে এটা করেছেন। কিন্তু গেরুয়া মানেই বিজেপি নয়।’ যদিও সম্প্রতি হিন্দু মহাসভার গোমূত্র পানকে কটাক্ষ করেই বাবুল সুপ্রিয় এই মন্তব্য করেছেন বলে মনে করছে বিজেপির একাংশ। কিন্তু তরজা থামছে না।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে জোড়াসাঁকোয় বিজেপি নেতা নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের করোনা রুখতে গোমূত্র পানের আসর ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়। যদিও তার দায় নিজেদের কাঁধে নেয়নি রাজ্য বিজেপির নেতারা। সায়ন্তন বসু থেকে লকেট চট্টোপাধ্যায় সকলেই জানান, এটা দলীয় কর্মসূচীর অংশ নয়। তবে দিলীপ এ নিয়ে উল্টো সুরই গেয়েছিলেন। গোমূত্র উৎসবে দলের অনুমতি ছিল কিনা সে নিয়ে কিছু না বললেও গোমূত্রে জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘হিন্দুর বাড়িতে যখন সত্যনারায়ণের সিন্নি দেওয়া হয়, তখন তার মধ্যে গোমূত্রও থাকে। হিন্দুদের আরও নানা আচার-অনুষ্ঠানে গোমূত্র ব্যবহার করা হয়। আজ নয়, হাজার হাজার বছর ধরে এটা হয়ে আসছে।’ তিনি আরও বলেন যে, ‘এটা কে বলল যে, গোমূত্র খেলে ক্ষতি হয়? রোজ কত মানুষ গোমূত্র কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। কোটি কোটি টাকার ব্যবসা হচ্ছে। এমনি এমনি তো হচ্ছে না।’ যা একপ্রকার নারায়ণ এবং গোমূত্রপানকে সমর্থন করাই। এ নিয়েই নাম না করে বাবুল এবার দিলীপকে বিঁধলেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।