মাসখানেক আগেই বাংলায় বেজে গিয়েছে পুরভোটের দামামা। ইতিমধ্যেই জোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। যেহেতু আগামী বছর রাজ্য বিধানসভার ভোট। তাই আসন্ন পুরভোটই হল সেমি ফাইনালই। তাই ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। তৃণমূলের তরফে যুব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, কাজ এবং স্বচ্ছ ভাবমূর্তির ভিত্তিতেই মিলবে ভোটের টিকিট। কে কেমন কাজ করছেন, কার কাজ কতটা বাকি আছে, এলাকায় কার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল, ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচী কারা পালন করেছে- সবেরই হিসেব তৈরি রেখেছে দল। সেই রিপোর্ট দেখেই দলনেত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন, কাকে কাকে প্রার্থী করা হবে। এবার জানা গেল, যে রিপোর্ট মিলেছে কলকাতা পুরসভায় দলের কাউন্সিলরদের মধ্যে ৩০ শতাংশের কাজ নিয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব অসন্তুষ্ট।
তবে তৃণমূল নেতৃত্ব চাইছেন, ‘হারানো আস্থা’ পুনরুদ্ধার করতে ওই সব কাউন্সিলর নিজের নিজের ওয়ার্ডে সাধারণ মানুষের কাছে যান, প্রয়োজনে নাগরিকদের কাছে ক্ষমা চান। অবশ্য তার পরেও টিকিট দেওয়ার ব্যাপারে শেষ কথা বলবে দল। নিজের পছন্দ মতো ওয়ার্ডে না দাঁড়াতে পেরে কিংবা প্রার্থী হতে না-পেরে কোনও বিদায়ী কাউন্সিলর যদি অন্তর্ঘাত বা দলের ক্ষতি করার চেষ্টা করেন, তা হলে দল তাঁর বিরুদ্ধে কঠোরতর ব্যবস্থা নেবে। কলকাতার কাউন্সিলরদের মঙ্গলবার ‘তৃণমূল ভবনে’ ডেকে এই বার্তাই জোরালো ভাবে দিয়েছেন দলীয় নেতৃত্ব। গতকালের ওই বৈঠকে কাউন্সিলরদের কাছে তৃণমূল নেতৃত্ব স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ভোটে জেতার ব্যাপারে তাঁদের নির্ভর করতে হবে মানুষের আস্থার উপরেই। যে সব কাউন্সিলরের পারফরম্যান্স ভালো নয়, যে সব কাউন্সিলর তাঁদের উপর নাগরিকদের আস্থা ধরে রাখতে পারেননি, দল তাঁদের সতর্ক করার পাশাপাশি শোধরানোরও সুযোগ দিচ্ছে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, বৈঠকে যুব তৃণমূল সভাপতি ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘মানুষের আস্থা, ভরসা নিয়েই প্রার্থীদের জিতে আসতে হবে। দলের কাছে খবর আছে, অন্তত ৩০ শতাংশ কাউন্সিলর ঠিক কাজ করেননি। আমরা চাইলে আজই তালিকা বের করে দিতে পারি। কিন্তু তাঁদের সুযোগ দিচ্ছি। এলাকায় ফিরে গিয়ে মানুষের কাছে যান। প্রয়োজনে মানুষের কাছে ক্ষমা চান।’ দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি বলেন, ‘যাঁর যত টুকু দুর্বলতা আছে, তা মেরামত করে নিন। এখনও সময় আছে।’ তৃণমূলের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোরের উপস্থিতিতে ওই বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যেপাধ্যায় ও সুব্রত বক্সি ছাড়াও দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও প্রবীণ মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মতো শীর্ষ ও অভিজ্ঞ নেতারা তাঁদের অভিজ্ঞতা, পরামর্শ ও মতামত জানান। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে পিকে বলেছেন, ‘আমি আপনাদের কাছে শুনতে এসেছি। আপনারা কিছু বললে পরামর্শ দেব।’
