গত কয়েক দিন ধরেই হিংসার আগুনে জ্বলছে রাজধানীর এক অংশ। মৌজপুর, ব্রহ্মপুরী, ভজনপুরাচক, গোকুলপুরী-সহ উত্তর-পূর্ব দিল্লীর বিভিন্ন এলাকায় চলছে দফায় দফায় সংঘর্ষ। আর তার ফলে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। এই পরিস্থিদিল্লীতে সেখানে কাজ করতে গিয়ে আটকে পড়েছিলেন মুর্শিদাবাদের শ্রমিকরা। অবশেষে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের উদ্যোগে আটকে পড়া ১৩ জন বাঙালি শ্রমিকদের বুধবার রাতের কালকা মেলে তুলে দেওয়া হয়। সকালে তাঁদের ট্রেন হাওড়ায় পৌঁছতেই চেপে রাখা উদ্বেগ সরিয়ে আনন্দের অশ্রু গড়িয়ে পড়ল মায়েদের চোখ থেকে।
আলমগীর শেখের যখন ১২ বছর বয়স, তখন মারা যান তাঁর বাবা গোলাম শেখ। মা ও ভাইবোনের নিয়ে অচল হয়ে পড়া সংসারের চাকাটাকে সচল রাখতে দিল্লী চলে গিয়েছিল সে। কাজ নিয়েছিল জাফরাবাদের একটি ফ্যান তৈরির কারখানায়। সেখানে ফ্যানের কনডেন্সার তৈরির কাজে লাগানো হয়েছিল ১২ বছরের আলমগীরকে। আলমগীর এখন ২০। তাঁর হাত ধরে পরে সেই ফ্যান তৈরির কারখানায় কাজ নেয় ভাই শাহাবুলও। শুধু তাঁরাই নয়, নিউড়িপাড়ার বিভিন্ন ঘরের মোট ১৩ জন ছিলেন জাফরাবাদে। বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন তাঁরা।
গোষ্ঠী সংঘর্ষে দিল্লি রক্তাক্ত হয়ে উঠতেই ছেলেদের চিন্তায় রাতের ঘুম চলে গিয়েছিল নিউড়িপাড়াতেও। তবে এখন তারা হাওড়া নামতেই ইতিমধ্যেই অপেক্ষা শুরু হয়ে গেছে মুর্শিদাবাদের নওদার নিউরিতলা গ্রামে। কখন ঘরে ফিরবে ঘরের ছেলে। নিউরিতলার মায়েরা জানতে পেরে গেছেন হাওড়া থেকে পুলিশ এসকর্ট করে সড়কপথে ঘরে ফিরিয়ে দিচ্ছে তাঁদের ছেলেদের। তাই চারদিন পর শুক্রবার হেঁসেলে ঢুকছেন মমতাজ বেওয়ারা। হাতে সময় বেশি নেই। বিকেলের মধ্যেই তৈরি করে ফেলতে হবে ছেলেদের পছন্দের খাবার।