বিগত ৩ দিন ধরে রাজধানীতে চলা দাঙ্গার আগুন আপাতত কিছুটা কমলেও, বেশ কিছু জায়গায় এখনও সেই আগুন ধিকিধিকি জ্বলছে। ক্রমশ ছড়িয়ে পড়া অশান্তির জেরে কাঠগড়ায় উঠেছে দিল্লী পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা। এই অভিযোগ বারবার তুলেছে বিরোধীরা। এবার এই একই অভিযোগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি দিলেন বিজেপি শরিক শিরোমণি অকালি দলের সাংসদ নরেশ গুজরাল। তিনি অভিযোগ করেছেন, দিল্লীর হিংসায় কার্যত ‘কাঠের পুতুল’ হয়েছিল পুলিশ। সাংসদ হিসেবে পরিচয় দিয়ে সাহায্য চাইলেও, তা মেলেনি। শরিক দলের সাংসদের এহেন অভিযোগে গেরুয়া শিবির যে নতুন করে বিড়ম্বনায় পড়বে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
প্রসঙ্গত, সিএএ বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রবিবার রাত থেকেই উত্তর-পূর্ব দিল্লীতে নতুন করে অশান্তি ছড়িয়েছে। সোমবার থেকে ভয়াবহ রূপ নেয় সেই অশান্তি। গাড়ি-বাড়ি-দোকান ভাঙচুর থেকে অগ্নিসংযোগ, বাদ পড়েনি কিছুই। ইতিমধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩৫ জনের। সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যে পর্যন্ত নতুন করে অশান্তি না ছড়ালেও পরিস্থিতি এখনও থমথমে। শুনশান রাজধানী। রাস্তায় কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে ভারী আধাসেনার মার্চের শব্দ। কিন্তু অবিশ্বাসের পরিবেশ থেকে এখনও বেরিয়ে আসতে পারছেন না দিল্লীবাসী। আর এই পরিস্থিতির জন্য পুলিশের দিকেই আঙুল তুলছেন আমজনতা থেকে রাজনৈতিক দলের নেতারা সকলেই। সেই অভিযোগে অবশ্য আমল দিতে নারাজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর কথায়, ‘পুলিশ নিজের কাজ করছে।’ তবে এহেন পরিস্থিতিতে অকালি দলের সাংসদের চিঠি তাঁর উপর চাপ বাড়াল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
অমিত শাহের উদ্দেশে লেখা চিঠিতে নরেশ গুজরাল জানিয়েছেন, মঙ্গলবার উপদ্রুত এলাকার মউজপুরে একটি বাড়িতে ১৬ জন মুসলিম আটকে পড়েছিলেন। একদল উন্মত্ত জনতা সেই বাড়ির দরজা ভেঙে ঢোকার চেষ্টা চালাচ্ছিল। সাংসদ খবর পেয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। আটকে পড়ে ১৬ জনকে উদ্ধারের আর্জি জানান।
নরেশবাবুর কথায়, ‘পুলিশকে বললাম, আমি সাংসদ। ওদের সাহায্য করুন। কিন্তু কোনও কথাই শুনল না। বরং রাত পৌনে ১২ টায় মেসেজ এল, আমার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। শেষপর্যন্ত হিন্দু পড়শিদের সহায়তায় ওই ১৬ জন বেঁচে যান।’ এরপরই বিজেপির জোটসঙ্গী অকালি দলের সাংসদ আক্ষেপ করে বলেন, ‘পুলিশ যদি একজন সাংসদের কথাই যদি না শোনে, তাহলে সাধারণ মানুষের কী অবস্থা তা ভালোই বুঝতে পারছি।’