এখন রাত দুটো। দিল্লি রাজভবনের সামনে ভীড় বাড়ছে৷ আম আদমিরা জড়ো হয়েছে। রাস্তায় বসে পরেছে। রাত লম্বা আজ।
অশান্ত সময়ে যাদের নিয়ে প্রত্যাশা বাড়ে, যারা দ্বেষকে হারিয়ে দেশের রাজনীতি করার শপথ নিয়েছিল তাদের প্রতি অভিমানটা ও সবচেয়ে বেশী হয়। যার হাতে না আছে সেনা, না আছে পুলিশ তাকে সন্ধে থেকে গালাগাল শুনতে হচ্ছিল সে কেন মাঠে নেই৷ কেন দিল্লির আগুন থামাতে তাকে দেখা যাচ্ছে না। অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও আম আদমি পার্টি এ যাবতকালের সবচেয়ে কঠিন অগ্নিপরীক্ষাটা দিয়ে সরকার গঠন করেছে। একদিকে একের পর এক উন্নয়নমূলক কাজ অন্যদিকে সাম্প্রদায়িক, বিভাজনের রাজনীতি। শেষ মেশ জিতেছে অগ্রগতির রাজনীতিই কিন্তু সে বিজেপির ফাঁদে পা যাতে না দেয় তাই সদা সতর্ক।
জনতার তীব্র অভিমানের মুখে খবর পেলাম অরবিন্দ কেজরিওয়াল নিজে ফোন করে সব বিধায়ককে, দিল্লির লেফটেনেন্ট গভর্নরের বাড়ির সামনে বসে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। সারা রাত তারা বসে থাকবে যতক্ষণ না তাদের সময় দেওয়া হচ্ছে, লেফটেনেন্ট গভর্নর গৃহমন্ত্রীকে ফোন করে তৎক্ষনাৎ ব্যবস্থা নিতে বলছে, অপরাধীরা গ্রেফতার হচ্ছে।
এলজি দেখা করবে না বলেছে কারণ আইন শৃঙ্খলা কেন্দ্রের হাতে। সে ক্ষেত্রে আপ সারা রাত ধর্নায় বসে থাকবে। কালকে আরো লোক নিয়ে ধর্না দেবে? পাশাপাশি প্রতি পাড়ায় রাতজাগা হচ্ছে। আপের স্থানীয় নেতারা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে।
এই লড়াইটা সহজ না। কথায় কথায় কেজরিওয়ালকে গাল দেওয়ার আগে একটু তাকে ও সময় দিন। মাথায় রাখবেন এই লোকটাই দু সপ্তাহের মধ্যে কংগ্রেসের সাথে তৈরি সরকার নিজের ফেলে দিয়েছিল। ফের একা বিপুল ভোটে জিতে এসেছিল৷ কংগ্রেসের সাথে সরকার গঠনের আগে মানুষের কাছে জানতে চেয়েছিল, তাদের ফের সরকার বানানো উচিৎ কী অনুচিত৷ রিলায়েন্স গোষ্ঠীর চোখে চোখ রেখে লড়াই করেছিল। সব বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানির ব্যবসা লাটে তুলেছিল, দিল্লির সরকারি স্কুলকে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের থেকে ও ভালো করার পরিকল্পনা নিয়ে সফল হয়েছিল৷
পিচ্ছিল পিচ। দুর্ধর্ষ দুশমন। সময় দিন তুলে খেলার। ছয় মারতে গিয়ে আউট হলে? সবে তো দিল্লির বাইরে ম্যাচ খেলার চেষ্টা চলছে। শেষ কবে একজন আইআইটি পাস, IRS অফিসারকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কল্পনা করেছেন?
পুনশ্চঃ যে রোটি-কাপড়া-মাকানের রাজনীতি করে সে দরকার পরলে হনুমান চালিসা ও গাইতে পারে। কিন্তু তারই কথায়, হনুমানজীই তাকে জাতের লড়াই না করে ভাতের লড়াই করতে আদেশ দিয়েছে নাকি৷ সে নিজেই বলে, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি খুব খারাপ। এ রাজনীতি রাম, হনুমানকে ও বিভাজিত করতে পারে। এই যেমন হনুমানজী এখন একচেটিয়া আপের সম্পত্তি। Paid Back By Their Own Coin, Eh?
মতামত লেখকের ব্যক্তিগত