গত কালই ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, বাণিজ্য নিয়ে ভারতের কাছ থেকে ভাল ব্যবহার আমেরিকা পায়নি। কূটনীতিকদের মতে, গত দু’বছর ধরে লাগাতার চেষ্টা সত্ত্বেও বাণিজ্য চুক্তি সই না-করতে পারায় হতাশা তৈরি হয়েছে সাউথ ব্লকে। কিন্তু ট্রাম্পের এই বহু প্রচারিত এবং আড়ম্বরপূর্ণ সফরের ঠিক আগে সেই মনোভাব আড়াল করতে চাইছে মোদী সরকার।
বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে নিজেদের হতাশা আড়াল করাই এখন মূল লক্ষ্য বিজেপির। দু’টি দেশের নিজ নিজ জাতীয় স্বার্থ জড়িত বলেই আন্তর্জাতিক স্তরে কোনও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করা অত্যন্ত ‘জটিল প্রক্রিয়া’। সে কারণে এ নিয়ে কোনও ‘কৃত্রিম সময়সীমা’ আগে থেকে নির্ধারণ করা অসম্ভব। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আসন্ন ভারত সফরে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে প্রত্যাশার পারদ শীর্ষ থেকে একবারে শূন্যে নেমে আসার পরে এমনই বিবৃতি দিলেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু মাত্র আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নয়, মোদী সরকারের বিদেশনীতির একটি বড় ব্যথর্তাই হল, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ক্ষেত্রে নিজেদের রফতানি বাড়াতে না পারা এবং কোনও বড়মাপের আন্তর্জাতিক চুক্তি করতে না পারা। আরএসএসের চাপের কাছে নতি স্বীকার করে সংরক্ষণশীল অর্থনীতির দিকে ঝুঁকে থাকা এর অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন অনেকে। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড-সহ ষোল দেশের প্রস্তাবিত বাণিজ্য চুক্তি (আরসিইপি) থেকে মোদী সরকার সরে এসেছে শেষ মুহূর্তে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে দফায় দফায় কথাই চলছে শুধু। কিন্তু তা শেষ পর্যন্ত চুক্তিতে রূপায়িত হবে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। মোদী সরকারের ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ এবং ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতি এত দিন পরেও নড়বড়ে দেখাচ্ছে তার কারণ, এই সব ক্ষেত্রে বাণিজ্যের ভূমিকা বা লেনদেন তুলনায় কম। সূত্রের বক্তব্য, ক্রমশ আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানি কমছে ভারতের। ভারতীয় সংস্থাগুলির তৈরি করা পরিসরে থাবা বসাচ্ছে অন্যান্য দেশ। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-র সযত্নলালিত নীতিকেও ম্লান দেখাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।