২০১৭ সালের পয়লা ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাথ্যসাথী প্রকল্পের সূচনা করেন। গত ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার এই প্রকল্পে যুক্ত হয়েছেন রাজ্যের সাড়ে সাত কোটি মানুষ। রাজ্যের সমস্ত সরকারি হাসপাতালের সঙ্গে প্রকল্পভুক্ত ১৫০০ বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমেও স্বাস্থ্যসাথীর উপভোক্তারা চিকিৎসার সুযোগ পাবেন। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বিমার প্রিমিয়াম বাবদ বছরে ১২০০ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। শহর কলকাতায় দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী আরও দেড় লক্ষ পরিবারকে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের আওতায় আনার কাজ শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের সহযোগিতায় ইতিমধ্যেই উপভোক্তাদের বাছাই করে প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তির কাজ শুরু করেছে কলকাতা পুরসভা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ‘বিশেষ অভিযান’-এর মাধ্যমে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নতুন করে ওই দেড় লক্ষ পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করার কাজ শেষ করার টার্গেট বেঁধে দেওয়া হয়েছে। শহর কলকাতার বস্তিবাসী, অসংগঠিত ক্ষেত্র ও প্রান্তিক মানুষ এই প্রকল্পের আওতায় এলে, রাজ্যজুড়ে উপভোক্তার সংখ্যা সাড়ে সাত কোটি ছাড়িয়ে যাবে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার গরিব, দুঃস্থ, প্রান্তিক ও অসংগঠিত ক্ষেত্রের মানুষকে আরও বেশি পরিষেবা দেওয়ার জন্য মোট ৩ লক্ষ ৭ হাজার ৭৭ পরিবারকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করার টার্গেট নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কলকাতা পুরসভা এলাকায় এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ৫৬ হাজার ৭৪৮ পরিবারকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক জানান, ২০১১ সালের সোশিও-ইকোনমিক কাস্ট সেন্সাস (এসইসিসি) অনুযায়ী স্বাস্থ্যসাথীর পরিবার বাছাই করতে গিয়ে দেখা যায়, বাকি দেড় লক্ষ পরিবারের কোনও হদিশ নেই। কারণ অনুসন্ধান করে জানা যায়, বহু পরিবার জীবন-জীবিকার তাগিদে কলকাতায় এসে বসবাস করলেও, পরে অন্যত্র পাকাপাকিভাবে চলে গিয়েছে। ওই আধিকারিকের কথায়, এরপর স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়, ২০১৪-’১৫ সালে দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী (বিপিএল) মানুষের সংশোধিত তালিকার ভিত্তিতে যে খাদ্যসাথী প্রকল্প এবং ডিজিটাল রেশন কার্ড তৈরি হয়েছে, সেই তালিকা অনুযায়ী শহর কলকাতায় স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে পরিবার অন্তর্ভুক্তির অনুমতি দেওয়া হোক। বিষয়টি নজরে আসে মুখ্যমন্ত্রীরও। তাঁরই নির্দেশে সেই অনুমতি দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুরসভাকে। দ্রুতগতিতে এখন চলছে বাকি দেড় লক্ষ পরিবারকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তির কাজ। যা শেষ হবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি।