সবকটি বুথফেরত সমীক্ষাতেই মিলেছিল স্পষ্ট ইঙ্গিত। সেই মতোই দিল্লীতে জয়ের পথে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি। এই মুহূর্তে ফল গণনার কাজ চলছে পুরোদমে। কিন্তু ট্রেন্ড যে পথে এগোচ্ছে তাতে দিল্লীর চিত্র অনেকটাই পরিষ্কার। আরামসে হ্যাটট্রিক করার পথে এগোচ্ছেন কেজরিওয়াল। অন্যদিকে, প্রত্যাশার চেয়েও খারাপ ফল হতে চলেছে বিজেপির। বেলা বাড়তেই ভোটপ্রবণতায় ‘সিঙ্গল ডিজিট’-এ নেমে গিয়েছে গেরুয়া শিবির। এখনও পর্যন্ত ৭০টি আসনের মধ্যে ৬৩টি আসনে এগিয়ে আপ। বিজেপি সেখানে এগিয়ে মাত্র ৭টি আসনে।
তবে ভোটে ভরাডুবি ঘটলেও গতবারের চেয়ে বেড়েছে বিজেপির ভোটের হার। দিল্লীতে তারা এখনও পর্যন্ত পেয়েছে ৩৮.৭৬ শতাংশ ভোট। ৫২.৫৪ শতাংশ ভোট পেয়েছে আম আদমি পার্টি। ৩৯ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পেলেও ‘স্ট্রাইক রেট’ বিজেপির অত্যন্ত খারাপ। স্ট্রাইক রেট অর্থাৎ প্রাপ্ত ভোটের সঙ্গে কতগুলি আসন আসছে। যে ব্যাপারে ‘পিএইচডি’ ডিগ্রি রয়েছে গেরুয়া শিবিরের। এর আগে একাধিক রাজ্যে তারা এমনটা সফলভাবে করেছে। কিন্তু কেন দিল্লীতে বিজেপির স্ট্রাইক রেট এতটা খারাপ হল? ভোটের হার দেখলেই সেটা স্পষ্ট হয়ে যাবে।
আপ পেয়েছে ৫৩.৫৬ শতাংশ ভোট। ৩৮.৭৮ শতাংশ ভোট পেয়েছে বিজেপি। কংগ্রেসের ভোটের হার ৪.২৫ শতাংশ। ফলে লড়াইটা দ্বিমুখী – আপ বনাম বিজেপি। কম ভোটের হার নিয়ে স্ট্রাইকিং রেট ভাল হয়, যখন ভোট কাটাকাটির অঙ্ক থাকে। কিন্তু রাজধানীতে কংগ্রেস পরিণত হয়েছে প্রান্তিক শক্তিতে। সে কারণে ফায়দা তুলতে পারেনি বিজেপি। প্রাথমিকভাবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, কংগ্রেসের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক পুরোটাই চলে গিয়েছে আপের ঘরে। সংখ্যালঘুরা বিজেপির বিরুদ্ধে কেজরীবালের দলকেই শক্তিশালী বলে মনে করেছে। সেটা ভোটের হারেও স্পষ্ট।
তবে বিজেপিকে যে রোখা গিয়েছে, এতেই বেশ খুশি কংগ্রেস নেতারা। যেমন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী তো বলেই দিয়েছেন, ‘তৃতীয়বারের জন্য আম আদমি পার্টি ক্ষমতায় আসবে, এ তো জানা কথাই। কংগ্রেসের হার অবশ্যই মেনে নিতে পারছি না। তবে বিজেপি ও তাদের সাম্প্রদায়িক নীতির বিরুদ্ধে আপের জয় বেশ তাৎপর্যপূর্ণই।’ আর এক কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির কথায়, ‘বিজেপি জিতছে না, এতেই আমি খুশি। আপের জেতায় ততটা কষ্ট হচ্ছে না। শিক্ষাক্ষেত্রে ভাল কাজ করেছে আপ।’