গত বছরের ৫ আগস্ট কাশ্মীরের ওপর থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপ করে কেন্দ্রের মোদী সরকার। আর তারপর থেকেই নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছিল শীর্ষ রাজনীতিবিদ এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীদের। প্রায় ৬ মাস বন্দী জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লাদের বন্দী দশা নিয়ে যখন দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলেও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই গ্রেফতার করা হল তাঁদের৷ কঠোর জনসুরক্ষা আইনে বৃহস্পতিবার রাতে জম্মু-কাশ্মীরের এই প্রাক্তন দুই মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ এছাড়াও গ্রেফতার করা হয়েছে পিডিপি ও এনসির অন্যান্য নেতাদের৷
জানা গিয়েছে, পুলিশের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট এসে মুফতিকে গ্রেফতারের অর্ডার দেন৷ বন্দীদশায় এখানেই রয়েছেন তিনি৷ জনসুরক্ষা আইনে গ্রেফতার করা হয় ওমর আবদুল্লাকেও৷ এ নিয়ে কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেন, জনসুরক্ষা আইনে এই দুই নেতার গ্রেফতারি আমাকে হতাশ ও বিধ্বস্ত করেছে৷ তিনি বলেন, এটা জম্মু কাশ্মীরের কঠোর আইনি পদক্ষেপ, যার বলে কর্তৃপক্ষ জনসুরক্ষা আইনে কাউকে বিনা বিচারে ২ বছর আটক করে রাখতে পারে৷ তিনি টুইট করে বলেন, বিনা অভিযোগে কাউকে আটক করা গণতন্ত্রের কদর্যতা৷ তিনি শান্তপূর্ণ প্রতিরোধ ও আইন অমান্যের ডাক দিয়েছেন৷
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার তাঁদের প্রিভেন্টিভ ডিটেনশনের মেয়াদ শেষ হয়৷ তাই রাতে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়৷ ওমর আবদুল্লার বাবা তথা জম্মু-কাশ্মীরের আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাকেও এই একই আইনের বলে গ্রেফতার করা হয়েছিল গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে৷ যদিও আগস্ট মাস থেকেই তিনি গৃহবন্দী। ৮৩ বছরের প্রবীণ রাজনৈতিক নেতা ফারুক আবদুল্লার বিরুদ্ধে জনশৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগে করা হয়েছিল। এজন্যও কাউকে বিনা বিচারে টানা তিন মাস আটক করে রাখা যায়।
উল্লেখ্য, কাঠ পাচারকারীদের কথা চিন্তা করে এই আইন তৈরি করেছিলেন ফারুক আবদুল্লার বাবা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শেখ আবদুল্লা, এই আইনের নাম জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর পাবলিক সেফটি অ্যাক্ট (পিএসএ)। পিএসএ-কে সাধারণ ভাবে কালা আইন বলে অভিহিতকরা হয়ে থাকে কারণ যারা আইন ভাঙে বা ভাঙার চেষ্টা, তাতে ইন্ধন জোগায় বা আইন ভাঙতে পারে বলে মনে করা হয়, এই আইনের বলে সরকার তাদের আটক করে রাখতে পারে। এই আইনের বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট সীমার বাইরে নিয়ে যাওয়ার অধিকারও সেই আধিকারিকের রয়েছে যিনি এই নির্দেশ দিয়েছেন।