জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ায় এর আগেও কেন্দ্রকে তোপ দেগেছিল বিরোধীরা। আর এবার ফের কর সংক্রান্ত সরকারি বিলের মধ্যে হিন্দি শব্দ ঢুকে পড়ল। যা নিয়ে আপত্তি তুলে লোকসভায় রীতিমত হইহল্লা শুরু হল বিরোধী মহলে। তাঁদের অভিযোগ, মোদী সরকার জোর জবরদস্তি হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে দেশের জনগণের ওপর।
বাজেটেই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ ঘোষণা করেছিলেন, বিভিন্ন ট্রাইবুনাল ও আদালতে কর বিবাদ সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি করতে সরকার ‘বিবাদ সে বিশ্বাস’ নামের একটি প্রকল্প নিয়ে আসবে। যেখানে করদাতারা আয়কর দফতরের দাবি মতো বকেয়া কর মিটিয়ে দিলেই মামলা তুলে নেওয়া হবে। তাকে কোনও জরিমানা বা সুদ দিতে হবে না। আজ তার জন্য লোকসভায় ‘ডিরেক্ট ট্যাক্স বিবাদ সে বিশ্বাস বিল’ পেশ করেন অর্থমন্ত্রী।
লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী অভিযোগ তোলেন, ‘নোট বাতিলের পরে যাঁরা কালো টাকা জমা করেছিলেন এবং যাঁরা আয়কর দফতরের আতসকাঁচের তলায় রয়েছেন, তাঁদের সরকার এখন খোলাছুট দিয়ে দিচ্ছে। কোনও গয়নার ব্যবসায়ী নোট বাতিলের আগে ১ কোটি টাকা ব্যবসা দেখিয়েছে। নোট বাতিলের পরে ১০ কোটি টাকা জমা করেছে। এখন সে শুধু কর মিটিয়েই ছাড় পেয়ে যাবে। কোনও জরিমানা দিতে হবে না।’
অন্যদিকে, কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর বলেন, ‘সরকার সৎ ও অসৎ করদাতাদের মধ্যে আর ফারাক রাখছে না।’ বিলের পক্ষে নির্মলা যুক্তি দেন, বিভিন্ন স্তরে প্রায় ৪ লক্ষ ৮৩ হাজার মামলা ঝুলে রয়েছে। বকেয়া অর্থের পরিমাণ ৯.৩২ লক্ষ কোটি টাকা। যেহেতু ৩১ মার্চ সময়সীমা স্থির করা হয়েছে, সে কারণে তড়িঘড়ি বিল পেশ করা হচ্ছে।
বিলের নামকরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী অভিযোগ তোলেন, ‘আমরা কখনও এমন নামকরণ দেখিনি। বিল ইংরেজিতে হয়। আমাদের বহু ভাষাভাষি দেশ। ভারতে শুধু ৪৩ শতাংশ লোক হিন্দি বলে। তা-ও ভোজপুরি ধরে। এ দেশে ১৬৫২টি ভাষা রয়েছে। তার মধ্যে ৬৩টি ভারতীয় ভাষাও নয়। কৌশলে সরকার দেশের বাকি অংশে হিন্দি চাপিয়ে দিচ্ছে।’’ নির্মলা নিজে দক্ষিণ ভারতীয়। তাঁকে অধীর প্রশ্ন করেন, ‘দক্ষিণ ভারতে এই বিবাদের অর্থ কে বুঝবে? আপনার রাজ্যে বিবাদ সে বিশ্বাস কে বুঝবে?’