শাহিনবাগে গুলি চালানোর ঘটনায় ছবি প্রকাশ করে দিল্লী পুলিশ দাবি করেছিল, শাহিনবাগের বন্দুকবাজ ও তাঁর বাবা বছরখানেক আগেই আম আদমি পার্টিতে যোগ দেয়। কিন্তু দিল্লী পুলিশের ওই অভিযোগকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ষড়যন্ত্র বলে আগেই উড়িয়ে দিয়েছিলেন দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দিল্লী পুলিশের ওই দাবি সত্যিই ভ্রান্ত ছিল ৪৮ ঘণ্টা যেতে না যেতেই প্রমাণ মিলল তার। এবার খোদ শাহিনবাগের বন্দুজবাজ কপিল গুজ্জরের বাবা গজে সিং জানিয়ে দিলেন, তাঁর ছেলে বা তাঁর আপের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। বরং নিজের ছেলেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ‘সেবক’ বলে দাবি করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে এই চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তিটি করেছেন কপিল গুজ্জরের বাবা। যা নতুন করে কেন্দ্রীয় সরকার বিজেপির উপর দিল্লী বিধানসভা নির্বাচনের আগে চাপ বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট।
গত সপ্তাহে শাহিনবাগে গুলি চালানোর সময় ধৃত বন্দুকবাজ কপিল গুজ্জরকে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিতে শুনেছিলেন স্থানীয়রা। ‘হিন্দুস্তান মে হিন্দুরাজ চলেগা’র মতো কট্টর সাম্প্রদায়িক মন্তব্যও করে সে। তখন তাঁর রাজনৈতিক আদর্শের আন্দাজ পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অধীনস্থ দিল্লী পুলিশ এই দোষও আম আদমি পার্টির ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও কসুর করেনি। আপ নেতা আতিশি এবং সঞ্জয় সিংয়ের সঙ্গে কপিলের ছবি প্রকাশ্যে এনে দিল্লী পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ দাবি করতে থাকে, কপিল ও তার বাবা নাকি এক বছর ধরে আপ সদস্য। ঠিক যেভাবে জেএনইউ-র ঘটনায় এবিভিপির সদস্যদের গ্রেফতার না করে ও জামিয়া বন্দুকবাজকে নাবালক দাবি করে তাদের বাঁচিয়ে দিয়েছে দিল্লী পুলিশ, এই ক্ষেত্রেও একই ধরনের চেষ্টা করা হয়েছিল। যা নিয়ে রাজনীতি করতে নেমে পড়ে বিজেপি।
কিন্তু মিথ্যের সামনে সত্যি কতক্ষণই বা চেপে রাখা সম্ভব? দিল্লী পুলিশের সেই মিথ্যার হাঁড়ি হাটেই ভেঙে দিলেন ২৫ বছরের কপিল গুজ্জরের বাবা। সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর কাছে গজে সিং জানিয়েছেন, ‘আমার বা আমার পরিবারের কারোর সঙ্গে আম আদমি পার্টির কোনও যোগাযোগ নেই। ওরা গতবার লোকসভা ভোটের সময় প্রচারে এসে আমাদের ওই আপ টুপি পরিয়েছিল। এগুলো সেই সময়েরই ছবি। উল্টে নিজের ছেলের সম্পর্কে গজে সিং বলেছেন, ‘আমার ছেলে একজন মোদী সমর্থক। মোদী এবং অমিত শাহ দু’জনকেই সেবকের মতো অনুসরণ করে সে। এবং ও সবসময়ই হিন্দুস্তান এবং হিন্দুত্ববাদের কথাই বলে।’