‘আমরা ক্রীতদাস নই, ভারতের নাগরিক।’ নেতাজি ইন্ডোরে ছাত্র-যুব কর্মশালায় এই ভাষাতেই বিজেপিকে এক হাত নিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, ২০২১ সালে বিজেপিকে পর্যুদস্ত করতে তিনি যে ছাত্র-যুব নেতৃত্বের দিকে তাকিয়ে, তাও স্পষ্ট করে দিলেন তৃণমূল নেত্রী।
সোমবার নেতাজি ইন্ডোরে মুখ্যমন্ত্রী চিঁড়ে খাওয়া নিয়ে বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের মন্তব্যকে টেনে তোপ দাগেন বিজেপির দিকে। বলেন, ‘একটা রঙে দেশ চলে না। দেশে কে চিঁড়ে খাবেন, সেটা কি বিজেপি ঠিক করবে? চিঁড়ে খেলে নাকি মানুষ চেনা যায়, জীবনে শুনিনি। পোশাক দেখেও নাকি চেনা যায়, শুনিনি এ সব। এ জিনিস কখনওই মেনে নেওয়া যায় না। আমাদের মাটিতে ভাগাভাগি হবে না। আমরা ক্রীতদাস নই, ভারতের নাগরিক। কেন অভিনন্দন যাত্রা করছে? ওটা আসলে বিসর্জন যাত্রা।’
বিজেপির পাশাপাশি এ দিন বিরোধী দলগুলির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল নেত্রী। বলেন, ‘নোটবন্দীর বিরুদ্ধে প্রথম আমি বিরোধিতা করেছিলাম। আমায় অনেকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কী করে বুঝলাম এটা খারাপ। নোট বাতিল নিয়ে ৮টা দল আমার সঙ্গে রাষ্ট্রপতির কাছে গেল। বাকিরা গেল না। তারা যদি যেত, তাহলে নোটবন্দী বাতিল হয়ে যেত। এনপিআর বৈঠকে যাইনি। বাকিরা গিয়েছিল। কী ভেবেছিল? মমতাকে একলা করে দেবে? আমি তো একলা চলোয় বিশ্বাসী।’
আগামী দিনে ছাত্র-যুবকে আরও সক্রিয় হওয়ার বার্তা দিয়েছেন মমতা। ছাত্রদের আরও এগিয়ে এসে আন্দোলন গড়ে তোলার বার্তা দিয়ে নেত্রী বলেন, ‘এখন ছাত্র রাজনীতির কিছুই হয় না। একটুতেই টিভিগুলো লাফালাফি করে। ছাত্র রাজনীতিতে এ সব হয়েই থাকে। আমাদের সময়ে তো রোজ কলেজে মারপিট হত। কলেজ গেটে তালা লাগিয়ে দিতাম। প্রিন্সিপালকে ঘেরাও করে গাছের নীচে বসিয়ে রাখতাম। এই ভুলটা অবশ্য আপনারা করবেন না। আমরা করে ফেলেছি। প্রিয় দা, সুব্রত দা ডেকে বলত, তোদের জন্য আমাদের সংসদে কথা শুনতে হচ্ছে।’
আন্দোলন নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করে মমতা বলেন, ‘মারের পর মার খেয়েছি, আমার শরীরে আর নেই কিছু। তবুও আজ হাঁটাচলা করি, কারণ আমি রোজ ১ ঘণ্টা এক্সারসাইজ করি। আমায় যে ভাবে মেরেছে, বড় বড় অপারেশন হয়েছে। কাউকে জানতে দিইনি। আমরা যে আন্দোলন করেছি, পৃথিবীতে সেই আন্দোলন কেউ করতে পারেননি। আমি আমার বইয়ে কিছু লিপিবদ্ধ করেছি।’