প্রকাশ্যে যতই হম্বিতম্বি করুক গেরুয়া শিবির, অন্দরমহল যে টালমাটাল তা বারবার প্রমাণ করে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। নিজেদের দলের মধ্যেই কর্মীরা একে অন্যের প্রতি মনোমালিন্যে জড়িয়ে পড়েন। এবার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে পূর্ব বর্ধমানে ভাঙনের মুখে বিজেপি।
বিজেপির এক যুব নেতার জেলখাটা নিয়ে কার্যত দু’ভাগ হয়ে গেল পূর্ব বর্ধমান জেলা বিজেপি। এতে দলের কট্টরপন্থীরা ফুঁসছেন জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। দোষারোপ করছেন রাজ্য নেতৃত্বকেও। এই নিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলায় বিরাট ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়ে আছে বিজেপি, বলে আশঙ্কা করছে রাজনৈতিক মহল।
গত ৯ জানুয়ারি বর্ধমান টাউন হলে এনআরসি নিয়ে রাহুল সিনহার একটি জনসভায় বিজেপির যুব মোর্চার নেতা শ্যামল রায় পুলিশের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য পেশ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। শ্যামলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর পরই অভিযোগ ওঠে বিজেপির জেলা ও রাজ্য নেতাদের বিরুদ্ধে। বিজেপির জেলার কয়েকজন নেতা এবং রাজ্যের যুব নেতা শ্যামলকে দলের কেউ নন বলে বিবৃতি দেন। এতেই চরম ক্ষোভ তৈরি হয় দলের মধ্যে। এদিকে, শ্যামলের জেল হেফাজত হওয়ার পর বিজেপি জেলা নেতৃত্ব কোনও রকম কোনও আন্দোলনে না যাওয়ায় দলের মধ্যে চরম ফাটল শুরু হয়। কার্যত দু’ভাগ হয়ে যায় যুব মোর্চা ও জেলা বিজেপি। ঘটনার পরদিন থেকেই জেলা অফিসে যাওয়া বন্ধ করে দেন তাঁরা।
প্রথম থেকেই বিজেপির অভ্যন্তরে চরম গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। এরই মাঝে সভাপতির অনুগামী যুব নেতা শ্যামল রায় থাকা সত্ত্বেও, পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। অবশেষে দু’দিন আগে শ্যামল জামিন পান। কিন্তু গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে যুব মোর্চার বিরাট অংশ বিজেপি অফিসে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, বিজেপির আন্দোলনেও ভাটা পড়েছে। তাঁদের পেছন থেকে সহযোগিতা করছে জেলা বিজেপির একটি বড় অংশ। তারাও কার্যত জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে দফায় দফায় বৈঠক করছেন কার্জন গেট লাগোয়া এক নেতার অফিসে। তাঁরা রাজ্যে নেতাদের কাছে বারবার জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও জেলা বিজেপির সভাপতিকে তাঁর পদে রাখা হয়েছে, তা নিয়ে ধন্দে পড়েছেন তাঁরা।