মোদীর এনআরসি নীতি চালু হওয়া মানেই দেশ জুড়ে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের হেনস্থা শুরু হবে, এমনটাই মনে করেন লেখক চেতন ভগত। দুর্নীতিই তখন ধর্মনিরপেক্ষ হয়ে উঠবে। তার কুফল ভোগ করবে দেশের মানুষ। তখন কিন্তু কেউ জাত ধর্ম দেখতে আসবেন না। এমনটাই মনে করছেন লেখক।
চেতন ভগত জানিয়েছেন, “মোদী জমানায় যেহেতু এনআরসি রূপায়ণের ক্ষমতা পাচ্ছেন সরকারি বাবুরা, তাই সেই ক্ষমতার অপপ্রয়োগ অবশ্যম্ভাবী। সেখানেই ঘুষ নেওয়া শুরু হবে। এনআরসি-র নিয়মনীতি যত কঠিন করা হবে, সে নিয়ম রক্ষা করতে না পারলে সাধারণ মানুষকে তত মাসুল দিতে হবে। তা দিতে না পারলে, সংশ্লিষ্ট সরকারি বাবু মানুষের নথি বাতিল করে দেবে। এর পরে তাঁকে ২০ বছর ধরে কোর্টের চক্কর কাটতে হবে”।
উদাহরণস্বরূপ আসামের কথা বলেছেন চেতন ভগৎ। তাঁর কথায়, “আসামের ১৯ লক্ষ লোক ডিটেনশন ক্যাম্পে রয়েছেন। সকলেরই কি নথি ছিল না? ধরে নেওয়া যায়, তাঁদের মধ্যে অনেক-ই সরকারি বাবুদের সন্তুষ্ট না করতে পারার কারণে বাতিল হয়েছেন নাগরিকপঞ্জি থেকে। তেমনটাই হতে থাকবে দেশজুড়ে।” তবে চেতন ভগৎ প্রথম ব্যক্তি নন, যিনি এই কথা বলছেন। এর আগে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এই কথাই বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সরকারি আধিকারিকদের হাতে বাড়তি ক্ষমতা দেওয়া বিপজ্জনক।
তবে এই ভয় একেবারেই অমূলক নয়। কারণ বিজেপি চিরকালই মেরুকরণের রাজনীতি করেছে। অন্য কোনও সরকার এনআরসি করলে তবু মানুষের মধ্যে খানিকটা বিশ্বাস থাকত। কিন্তু বিজেপি যেহেতু সবসময় হিন্দুত্ব নিয়েই মাথা ঘামান তাই একটা দুশ্চিন্তা চারিয়ে দিয়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে, যে মানুষ কোনও কিছু বিশ্বাসই করতে পারছে না।
চেতন ভগতের দাবি, “এত টাকা খরচ করে একটা অর্থহীন হাঙ্গামা করা হচ্ছে। একটা গৃহযুদ্ধ তৈরি করা হচ্ছে ইচ্ছাকৃত ভাবে। সারা দেশের মাত্র ৫ শতাংশ মানুষেরও যদি সব নথি না থাকে, তাহলেও সেই সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৬ কোটি। এত মানুষ কোথায় যাবে? মোদী সরকারকে সেটা ভাবতে হবে। আর এদেশে জন্মেও কতবার মানুষকে প্রমাণ করতে হবে নিজের পরিচিতি? ”