এনআরসি-সিএএ-এনপিআর নিয়ে প্রথম থেকেই সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি এই ইস্যুতে বেশ কয়েক বার তাঁকে পথে নামতে দেখেছে কলকাতা। এর পাশাপাশি জেলায় জেলায় পদযাত্রা করে কেন্দ্রের এই জনবিরোধী নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে তৎপর হয়েছেন তিনি। এবার উত্তরবঙ্গ উৎসবের মঞ্চেও সিএএ-এনআরসি-এনপিআরের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন মমতা। বললেন, ‘এনআরসি, এনপিআর আর সিএএ নিয়ে কেউ চিন্তা করবেন না। আমি আছি। আমি আছি মানেই বাংলার মানুষ আপনাদের পাশে আছে। কেউ গায়ে হাত দিতে পারবে না।’
https://www.facebook.com/ekhonkhobor18/videos/478747566351483/
প্রসঙ্গত, নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করে পদযাত্রা-সহ একগুচ্ছ কর্মসূচী নিয়ে আজই পাঁচ দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন শিলিগুড়ির কাছে শিবমন্দিরে উত্তরবঙ্গ উৎসবের উদ্বোধন করে তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাস, গণপিটুনি, ভাগাভাগি, অধিকার কাড়তে দেব না, আমরা সবাই মানুষ। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে ভালোবাসি।’ তাঁর সাফ কথা, ‘আমি ভোটের পাহারাদার নই। সারাবছর মানুষের পাশে থাকি।’
বাংলায় এনআরসি এবং সিএএ কার্যকর হবে না বলে আগেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। টিভি এবং সংবাদপত্রে লাগাতার বিজ্ঞাপন দিয়েছে সরকার। এনপিআরের কাজকর্মও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। গত ১৬ ডিসেম্বর নবান্ন থেকে এই মর্মে বিজ্ঞপ্তিও জারি হয়। শুধু তাই নয়। এনপিআর কার্যকর করা নিয়ে দিল্লীতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ডাকা বৈঠকেও যোগ দেননি মমতা। এবার উত্তরবঙ্গ গিয়ে সেই বৈঠকে না যাওয়া নিয়ে সাফাই দিলেন তিনি।
মমতার কথায়, ‘আমি প্রথমে ভেবেছিলাম সেনসাসের মতো কিছু বুঝি। পরে দেখলাম, এনপিআর-এ লিখতে হবে বাবা-মায়ের জন্মস্থানও। আজকে বলছে এনপিআর করতে হবে, বাবা-মায়ের জন্মস্থান দিতে হবে। তারপর দেখি বাবা-মায়ের জন্ম তারিখ জানতে চাইছে। তখন আমি বলি আমি এসব করতে দেব না। ওরা এনপিআর করে এনআরসি করতে চাইছে। আমরা সবাই বাবা-মায়ের বার্থ সার্টিফিকেট কোথায় পাব? আমি বৈঠকে যাইনি। কেউ তো অন্তত প্রতিবাদ করছে।’
শুধু তাই নয়। বাংলা বাদে সবকটি অবিজেপি রাজ্যই যে কেন্দ্রের বৈঠকে যোগ দিয়েছিল, তা নিয়েও ক্ষোভ উগড়ে দেন মমতা। তিনি বলেন, “অনেকে দেখলাম মিটিং-এ চলে গেলেন। কিন্তু আমি যাইনি। কারণ আমি বিশ্বাস করি, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে’।” সেই বৈঠকের পর নাকি অনেকে বলেছেন, কেন্দ্র জানিয়েছে বাবা-মায়ের জন্মতারিখ না দিলেও চলবে। কিন্তু সে কথা যে তিনি বিশ্বাস করেন না তাও স্পষ্ট করে দেন মমতা। বলেন, ‘পরীক্ষায় কেউ যদি একটা পরীক্ষা না দেয় তাহলে মার্কশিট অসম্পূর্ণ আসে। এসব কথা বুঝব না। আগে ওই কলম প্রত্যাহার হবে তারপর দেখা যাবে।’