মোদী আমলে অর্থনীতির অবস্থা গিয়ে ঠেকেছে তলানিতে। ধুঁকছে শিল্প। কর্মসংস্থান কমছে ব্যাপক ভাবে। এই পরিস্থিতিতে সামনে এল এক উদ্বেগজনক তথ্য। ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ দেশে মাত্র ৬৩ জন ধনকুবেরের কাছে যা সম্পদ রয়েছে, গত অর্থবর্ষের (২০১৮-১৯) বাজেটের অঙ্কের সমান। বা তার থেকে বেশি। অন্য ভাবেও বলা যায়, ১৩০ কোটি জনসংখ্যার ৭০ শতাংশের মানুষের সম্পদের যা পরিমাণ, ওই মুষ্টিমেয় মানুষের গ্যাঁটে তার চেয়ে ৪ গুণ বেশি সম্পদ গচ্ছিত রয়েছে। অক্সফাম ইন্ডিয়ার এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই, আর জোর গলায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন , এ দেশে মোটেও ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ’ চলছেনা।
এই মুহূর্তে বেহাল অবস্থা ভারতের অর্থনীতির। রাজকোষের ঘাটতিও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। পরিকাঠামো শিল্পে উতপাদন কার্যত মন্থর গতি। এই সময় নানা পদক্ষেপ সরকার নিয়েছে, কিন্তু উল্লেখযোগ্য ফল এখনও পাওয়া যায়নি বলে মত বিশেষজ্ঞদের। রাজকোষের ঘাটতির রাশ টানতে খরচ ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটতে হচ্ছে সরকারকে। জনকল্যাণমূলক বিভিন্ন খাতে লক্ষমাত্রা তুলনায় কমানো হয়েছে বরাদ্দ। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সাধারণ বাজেট পেশ করবে মোদী সরকার ২। এই সময়ে অক্সাফামের এই রিপোর্ট যথেষ্টই অস্বস্তিতে রাখবে বলে জানাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহল।
সোমবার বসছে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের বার্ষিক অধিবেশন। তার আগে অক্সফাম নামে এক সংস্থা ‘টাইম টু কেয়ার’ নামে সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, শুধু ভারতে নয়, সামগ্রিকভাবে বিশ্ব জুড়ে অসাম্যের ছবিটা ভয়াবহ। বিশ্বে মাত্র ২১৫৩ জন ধনী ব্যক্তির মোট সম্পদের পরিমাণ ৪৬০ কোটি মানুষের থেকে বেশি। অর্থাৎ পৃথিবী গ্রহে যত মানুষ বাস করে, তাদের ৬০ শতাংশের হাতে যে পরিমাণ সম্পদ আছে, সেই পরিমাণ সম্পদই আছে ২১৫৩ জন বিলিওনেয়ারের হাতে।
এই বৈষম্য দূরীকরণের আদৌ কোনও দাওয়াই আছে কিনা বা উত্তরোত্তর এই ধনী-গরিবের দূরত্ব কি বাড়তেই থাকবে? এই প্রশ্নে অক্সফাম ইন্ডিয়ার সিইও অমিতাভ বেহার মনে করছেন, সমতা ফেরানোর জন্য দ্রুত কিছু নীতি আনা উচিত সরকারের পক্ষ থেকে। তা না হলে আর্থিক বৈষম্য দূর করা অসম্ভব।