বছরের প্রথম ডার্বি। চলতি আই লিগের প্রথম বড় ম্যাচ। আর সেই ম্যাচেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ইস্টবেঙ্গলকে হারাল মোহনবাগান। এই টানটান ম্যাচের প্রথমার্ধ যদি মোহনবাগানের হয়, তাহলে দ্বিতীয়ার্ধ অবশ্যই লাল-হলুদের। আক্রমণ প্রতি-আক্রমণের খেলা চলল গোটা ৯০ মিনিট ধরে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত একে অন্যকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়ল না দু’দল। কিন্তু বাগান ফুটবলাররা সুযোগ থেকে ফসল তুললেন বেশি। ফলে চলতি আইলিগের প্রথম ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলকে হারাল মোহনবাগান।
প্রথমবার ডার্বিতে হার মানতে হল লাল-হলুদ কোচ আলেহান্দ্রো মেনেন্ডেজকে। সেইসঙ্গে লিগ টেবিলে অনেকটাই উপরে চলে গেল বাগান। এদিন ম্যাচ শুরুর থেকেই আক্রমণ শুরু করে ইস্টবেঙ্গল। প্রথম মিনিটের মধ্যেই কর্নার আদায় করে নেয় তারা। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে আক্রমণে ওঠা শুরু করে মোহনবাগানও। ১৩ মিনিটের মাথায় বক্সের মধ্যে থেকে লালরিন্ডিকা রালতের হেড বার উঁচিয়ে বেরিয়ে যায়।
এদিন দুই প্রান্তকে ব্যবহার করে আক্রমণে উঠছিল বাগান। একদিকে আশুতোষ মেহেতা ও অন্যদিকে নওদম্বা নওরেম বারবার ক্রস করছিলেন। ১৭ মিনিটের মাথায় বাঁ প্রান্তে বল ধরে বক্সে ঢুকে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে মাইনাস করেন নওরেম। ঠান্ডা মাথায় হেডে বাগানকে এগিয়ে দেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার হোসেবা বেইতিয়া।
গোল খাওয়ার পর জুয়ান মেরার পায়ে ম্যাচে ফিরতে থাকে ইস্টবেঙ্গল। বারবার ফাউল করে আটকাতে হয় লাল-হলুদের এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডারকে। ৩৭ মিনিটের মাথায় লালরিন্ডিকার ফ্রিকিক থেকে শঙ্কর রায়ের ভুলে সমতা ফেরাতে পারত ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু কাশিম আইদারার শট একটুর জন্য বাইরে বেরিয়ে যায়। পরের মিনিটেই বাগান স্ট্রাইকার ভিপি সুহেরের গোল ফাউলের কারণে বাতিল করে দেন রেফারি অজিত মিতেই। ১-০ ব্যবধানে এগিয়েই ড্রেসিং রুমে যান বাগান ফুটবলাররা।
দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণ-প্রতি আক্রমণের খেলা চলতে থাকে। ৬৪ মিনিটের মাথায় বেইতিয়ার কর্নার থেকে হেডে গোল করে বাগানের ব্যবধান বাড়ান পাপা বাবাকার দিওয়ারা। বাগান জার্সিতে প্রথম গোল হল বাবার। দু’গোল খেয়ে গোল শোধের মরিয়া চেষ্টা শুরু করে ইস্টবেঙ্গল। ৭১ মিনিটের মাথায় ফের খেলায় ফেরে তারা। ডিডিকার থ্রু ধরে গোল করে ব্যবধান কমান মার্কোস এস্পাদা।
পরের মিনিটেই খেলা ২-২ করার সহজ সুযোগ নষ্ট করেন ক্রেসপি মার্তি। চাপ বাড়াতে শুরু করে ইস্টবেঙ্গল। একের পর এক আক্রমণ আছড়ে পড়তে থাকে বাগান বক্সে। ৭৯ মিনিটের মাথায় জুয়ান মেরার শট বারে লেগে ফেরে। ৮৪ মিনিটের মাথায় কোলাডোর ফ্রিকিক একটুর জন্য বাইরে বেরিয়ে যায়।
চাপ বাড়ালেও সজাগ ছিল বাগান ডিফেন্স। এদিন দারুণ খেললেন ড্যানিয়েল সাইরাস ও ফ্রান মোরান্তে জুটি। নির্ভরযোগ্য দেখাল শঙ্করকেও। সুযোগ নষ্টের খেসারত দিতে হল ইস্টবেঙ্গলকে। শেষ পর্যন্ত ২-১ ব্যবধানেই ডার্বি জিতল মোহনবাগান। এদিনের জয়ের ফলে ৮ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে লিগশীর্ষে আরও খানিকটা এগিয়ে গেল মোহনবাগান। অন্যদিকে ৭ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে বেশ খানিকটা পিছিয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল।