তাঁর সংস্থা ঠিক কি কাজ করে, কিভাবে তাঁর সম্পত্তি ফুলে ফেঁপে উঠছে তা জানা না গেলেও, ‘জুনিয়র’ শাহ রয়েছেন একেবারে স্বকীয় মেজাজে। বিভিন্ন নামিদামী ব্র্যান্ডের জামাকাপড়ে দিব্যি নিজেকে টিপটপ রেখেছেন। যার পর থেকেই মনে করা হচ্ছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পুত্র জয় শাহ ইদানিং স্টাইল স্টেটমেন্টে বিশেষ আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। সম্প্রতি আহমেদাবাদে তাঁকে দেখা যায় ডিজাইনার রাঘবেন্দ্র রাঠোরের দোকানের উদ্বোধনে। এই বিখ্যাত রাজপুত ডিজাইনার নিজে তাঁর বিখ্যাত কালেকশন নিয়ে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও সেদিনের অনুষ্ঠানের আকর্ষণের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন জয় শাহই। এমনকি সেই দোকান ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন দামি শ্যুট নিজে পরেও দেখেছেন। সেই ছবি বেশ ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই চার বছরে জয় শাহের সংস্থার আয় বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১১৬ কোটি টাকা। এটা কীভাবে সম্ভব? দেশের অর্থনীতি যখন ডুবছে, তখন একমাত্র শাহ পরিবার ও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের ঘনিষ্ঠ মানুষদেরই প্রকৃত বিকাশ হচ্ছে। সূত্রের খবর, ২০১৫ সালে সংশ্লিষ্ট সংস্থার বার্ষিক আয় ছিল প্রায় ৩ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা। মাত্র এক বছরের মধ্যেই ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ২৪ কোটি ১৬ লক্ষ টাকায়। ২০১৭ সালে প্রায় দেড়শো কোটি টাকা। আর ২০১৯ সালে জয় শাহের সংস্থার আয় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১৯ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা। অর্থাৎ গত চার বছরে ওই সংস্থার আয় বৃদ্ধির পরিমাণ প্রায় ১১৬ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা।
সেইসময় বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলে কংগ্রেস অভিযোগ করেছিল, ‘সংশ্লিষ্ট সংস্থা ঠিক কী ব্যবসা করে, কেউ জানে না। কখনও বলা হয়, এটি শেয়ার বাজার সংক্রান্ত ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। কখনও আবার অন্য কিছু বলা হয়। কিন্তু কোন পদ্ধতিতে একটি সংস্থার প্রায় ১৫ হাজার শতাংশ পর্যন্ত আয় বৃদ্ধি সম্ভব, তা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছেন না। সমস্ত সংস্থাকে প্রতি বছর ৩০ অক্টোবরের মধ্যে আইনি কাগজপত্র এমসিএ’তে জমা দিতে হয়। না দিলে শাস্তি এবং জরিমানা দুটোই হওয়ার কথা। অথচ জয় শাহের এই সংস্থা ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে এই সংক্রান্ত কোনও কাগজপত্র এমসিএ’তে জমাই দেয়নি। তারপরেও তাকে কোনওরকম শাস্তির মুখে পড়তে হয়নি।’
প্রসঙ্গত, গত বছরের নভেম্বরে তিনি বিসিসিআইয়ের বোর্ড সেক্রেটারি হয়েছেন। সেইসময়েই জয় শাহ বেশ সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন। এবং ঠিক কাছাকাছি সময়েই নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পেজটি শুরু করে মাত্র ২৭ জন ফলোয়ার নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ব্লু-টিক পেয়েছিলেন। যা নিয়ে বেশ শোরগোল পড়েছিল। তবে তার থেকেও বেশি ‘জুনিয়র’ শাহের কেতাদুরস্ত উপক্রমগুলি আরও বেশি নজরকাড়া ছিল। বোর্ড সেক্রেটারি হওয়ার পর পরই নতুন হেয়ারস্টাইলে নিজেকে সাজিয়েছিলেন। বিয়ের সময় যে পাতলা চুলের রেখা দেখা গিয়েছিল সেখান থেকে তার নতুন ছাট বেশ প্রশংসনীয় ছিল নিন্দুকদের মহলে। আর তারপর থেকেই নেটিজেনরা বলছেন, বাবা নয় বরং দেশের ‘ফ্যাশনেবল’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পথেই হাঁটছেন অমিত-পুত্র জয় শাহ।