সদ্যই শেষ হয়েছে ২০১৯ সাল। কিন্তু বিগত বছরে গাড়ির বাজারের রাহুমুক্তি তো ঘটেইনি, বরং গত দু’দশকের মধ্যে ২০১৯ সালেই সবচেয়ে বেশি মন্দার কবলে পড়েছে দেশের গাড়ি শিল্প। বিক্রি কমেছে প্রায় প্রতিটি গাড়ি সংস্থারই। গাড়ি সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়াম ২২ বছর ধরে গাড়ি বিক্রির খতিয়ান তৈরি করছে। ডিসেম্বরের হিসেব হাতে আসার পরে তাদের মন্তব্য, ২০১৯ সালের মতো ব্যবসার এত খারাপ হাল আগে কখনও দেখেনি তারা। শুক্রবার সিয়াম জানিয়েছে, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে দেশে সব ধরনের গাড়ির পাইকারি বিক্রি কমেছে ১৩.৭৭ শতাংশ। অর্থাৎ খুচরো বাজারে বিক্রির জন্য ডিলারদের সংস্থার কাছ থেকে এত কম গাড়ি কিনতে দেখা যায়নি ওই ২২ বছরে। অর্থনীতির ঝিমুনির জেরে ডিসেম্বরে বিক্রি কমেছে ১৩.০৮ শতাংশ।
সিয়ামের এই রিপোর্টের পরেই বাজেটে কেন্দ্রের কাছে আরও বড় মাপের আর্থিক ত্রাণের দাবিতে সরব হয়েছে গাড়ি শিল্প। তারা দাবি করেছে, দু’দশকের সব থেকে খারাপ পরিস্থিতি থেকে তাদের বার করতে সরকারের তরফে আরও কড়া দাওয়াই। যার অন্যতম, বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রি বাড়াতে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারিতে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার। যাতে দেশেই ব্যাটারি তৈরি হয়। আর তার হাত ধরে খরচ কমে বৈদ্যুতিক গাড়ির। পুরনো গাড়ি বাতিলের জন্য জিএসটিতে ৫০ শতাংশ করছাড়ের মতো আর্থিক সুবিধার দাবিও জানানো হয়েছে। সওয়াল করা হয়েছে পুরনোগুলিকে ফের নথিভুক্ত করার চার্জ ও পথকর বাড়ানোর। যাতে নতুন গাড়ি কেনেন ক্রেতা।
উল্লেখ্য, বছর খানেক পেরিয়ে গিয়েছে গাড়ি বিক্রি বাড়ার নাম নেই। যার জেরে ইতিমধ্যেই গাড়ি শিল্পে ইতিমধ্যেই কাজ হারিয়েছেন ৩.৫ লক্ষেরও বেশি কর্মী। শিল্প মহলের দাবি, মানুষের আর্থিক অবস্থা এতটাই অনিশ্চিত যে, গাড়ি কেনার লোক কমেছে। তার ওপরে আগামী এপ্রিল থেকে রাস্তায় বিএস-৬ দূষণ বিধির গাড়ি ব্যবহার বাধ্যতামূলক হচ্ছে। সূত্রের দাবি, দূষণ কমানোর লক্ষ্যে এটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলেও, এতে খরচ ৮-১০ শতাংশ বাড়ছে। তাদের মতে, বাড়তি খরচ চাহিদায় কোপ ফেলছে। তাই বিএস-৬ বিধির গাড়িতে জিএসটি ২৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৮ শতাংশ করার আর্জি জানিয়েছে শিল্প। সিয়ামের প্রেসিডেন্ট রাজন ওয়াধেরাও বলেন, বিএস-৬ দূষণ বিধি মেনে সব গাড়ি তৈরি করতে হলেবাণিজ্যিক গাড়ির দাম ৮-১০ শতাংশ ও যাত্রী গাড়ির ৩-৭ শতাংশ বাড়লে বিক্রিতে আরও বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।