মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিএএ-এনআরসি বিরোধী পদযাত্রাগুলিতে মানুষের ঢল এবং জেএনইউ হামলা পরবর্তী সময়ে বিজেপির বিরুদ্ধে রাজ্যের ছাত্র-যুবকদের বিক্ষোভ-অবস্থানেই স্পষ্ট বাংলায় মোদী-বিরোধী হাওয়া এখন জোরদার। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর কলকাতা সফরে নাগরিক বিক্ষোভের চেহারা প্রবল আকার নেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
কলকাতায় সিপিএম-কংগ্রেস-সিপিআইএমএল লিবারেশনের মতো দল ছাড়াও সংখ্যালঘুদের একাধিক সংগঠন কালো পতাকা দেখিয়ে ‘গো ব্যাক মোদী’ আওয়াজ তুলবে বলে জানিয়েছে। শনিবার মোদী বিমানবন্দর থেকে শহরে ঢোকার পথে কৈখালিতে বিক্ষোভকারীদের জমায়েত কর্মসূচী আছে। তবে জায়গা বদলের সম্ভাবনাও আছে। ১২ তারিখ রাজভবনের বাইরেও এনআরসি-বিরোধী নাগরিক মঞ্চের বিক্ষোভ কর্মসূচী হওয়ার কথা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, ধর্মঘটের দিন যে ‘দায়’ ছিল, এ রাজ্যের শাসকপক্ষের কতকটা একই রকমের দায় থাকছে প্রধানমন্ত্রীর সফরেও। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন বরাবর ‘সাংবিধানিক’ রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকেন, তা থেকে তিনি কোনও মতেই বিচ্যুত হবেন না। প্ররোচনা যতই আসুক, অশান্তি তিনি বরদাস্ত করবেন না।
অন্যদিকে, দেশের অন্যতম বিরোধী নেতা হিসেবে তিনিই যেহেতু মোদী-বিরোধী জনমত গঠনে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন, তাই শান্তিপূর্ণ পথে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশেও বাধা হতে চাইবে না তাঁর পুলিশ। তবে বিক্ষোভ কোথায় এবং কোন পথে হচ্ছে তা অবশ্যই বিবেচ্য বলে ওয়াকিবহালের মহলের মত।
তবে প্রধানমন্ত্রীর আসাম সফর বাতিল হওয়ার পর বিজেপির অবশ্য এখন বাংলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জোর গলায় কিছু বলার জায়গাই নেই। কারণ বিজেপি-শাসিত রাজ্য হলেও ১০ জানুয়ারি শেষ মুহূর্তে মোদীর আসাম সফর বাতিল করতে হয় রাজ্য সরকারকে। প্রবল বিক্ষোভের ঝুঁকির কথা মাথায় রেখেই সরকারি প্রকল্প উদ্বোধন করতে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হয় তাঁকে।